সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের আগে হারানো জমি ফেরাতে আরেক নতুন কর্মসূচির পরিকল্পনা রাজ্যের শাসকদলের। দলীয় সূত্রে খবর, জঙ্গলমহল এলাকায় গত লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর ফের বিশেষ জনজাতির ভোট টানতে চালু হতে পারে ‘তফসিলির সংলাপ’ নামের কর্মসূচি। আপাতত পরিকল্পনা, দরজা দরজায় ঘুরে জনসংযোগের কাজ করবেন দলের তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত নেতারাই। গোটা পরিকল্পনাটি তৃণমূলের (TMC) ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) মস্তিষ্কপ্রসূত বলেই জানা গিয়েছে। তবে কবে থেকে তা চালু হবে, কীভাবেই বা তা এগোবে, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
উনিশের লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহল এলাকায় চূড়ান্ত ভরাডুবির মুখে পড়েছিল রাজ্যের শাসকদল। প্রতিটি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের গো-হারা হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন বিজেপি প্রার্থীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে জঙ্গলমহলে ‘ঢালাও উন্নয়ন’ সত্ত্বেও কেন এই ফলাফল, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে বসেছিল দলীয় নেতৃত্ব। আর একুশের আগে হারানো জনসমর্থন ফেরাতে নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে প্রশান্ত কিশোরকে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তাঁর পরামর্শেই একুশের বিধানসভা ভোটের খুঁটিনাটি প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। আমজনতার মনে ফের তৃণমূলের প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে প্রশান্ত কিশোরের তৈরি করে দেওয়া প্রথম কর্মসূচি ছিল – ‘দিদিকে বলো’। দীর্ঘ কয়েক মাসে যা ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখেছে বলে দাবি দলের।
[আরও পড়ুন: অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে আতঙ্কে কাঁটা অনভ্যস্ত পড়ুয়ারা, মুশকিল আসান করল কলেজ]
এসবের পাশাপাশি পিকে অবশ্য দলকেও নতুন করে গড়েপিটে নিয়েছেন। জেলাস্তরের নেতা, বিধায়কদের রীতিমতো ক্লাস নিয়ে জনতার মন পাওয়ার দাওয়াই দিয়েছেন। এরপর এলাকাভিত্তিক কর্মসূচির নীল নকশা সাজাচ্ছেন তিনি। জানা গিয়েছে, তারই অংশ ‘তফসিলির সংলাপ’। সম্প্রতি হাথরাসের ঘটনাকে সামনে রেখে রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী এই অভিযান চালু করার লক্ষ্য রয়েছে দলের। কারণ, ওই ঘটনায় আপাতত জাতীয় রাজনীতির হাওয়া অনেকটাই বিরোধীদের পালে, বিজেপি পক্ষে প্রতিকূল। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ‘তফসিলির সংলাপ’ আসলে একটি রাজ্যের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে জনসংযোগ আরও জোরাল করার উদ্যোগ। কারণ, লোকসভা ফলাফলের অন্তর্তদন্তে দেখা গিয়েছে, যে সব জায়গায় পদ্ম শিবিরের বাড়বাড়ন্ত, তার অনেকটাই তফসিলি অধ্যুষিত। অর্থাৎ তাঁদের ভোটেই বিজেপি প্রার্থীদের ঝুলি ভরতি হয়েছে। তাই সেসব ভোট ফের ঘাসফুল শিবিরে ফেরাতে পারলে আগামী বিধানসভায় বেশ লাভবান হবে শাসক শিবির।
[আরও পড়ুন: বীরভূমে ডিটোনেটর-সহ গ্রেপ্তার ১, জঙ্গিযোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ]
সম্প্রতি প্রতি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে অন্তত ১০ জন তফসিলি নেতার নামের তালিকা চাওয়া হয়েছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। মনে করা হচ্ছে, তাঁদের নিয়েই তৈরি হবে ‘তফসিলির সংলাপ’এর টিম। এই নেতারাই নিজের নিজের এলাকায় গিয়ে প্রচার করবেন। লক্ষ্য রাজ্যের ১ কোটি তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের কাছে পৌঁছনো। মাসখানেক ধরে চলবে প্রচার। সব চূড়ান্ত হয়ে গেলে শিগগিরই শুরু হয়ে যাবে তৃণমূলের ‘তফসিলির সংলাপ’ কর্মসূচি।