রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ফের পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি সমবায় নির্বাচনে ভরাডুবি বিজেপির। নিরঙ্কুশ জয় পেল তৃণমূল। শুক্রবার এগরার জুমকি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি এবং ভগবানপুর ১ ব্লকের শটুপুর কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করে জয়ী হয়েছে তৃণমূল শিবির। জানা গিয়েছে, জুমকি সমবায় সমিতির ১২টি আসনের মধ্যে সবকটি আসনেই জয়ী হয় ঘাসফুল শিবির। তার ফলে সমবায়টির দখল নেয় তৃণমূল। শাসকদলের দাবি, বিজেপির 'চরম সাংগঠনিক দুর্বলতা' প্রমাণ করেছে এদিনের ফলাফল। বিজেপির দাবি, কী কারণে এমনটা হয়েছে, সেই বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।
বিজেপির দখলে থাকা জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের জুমকি, মাণিকাদিঘি, বিশ্বনাথপুর, সিমুলিয়া গ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জুমকি সমবায় সমিতি। ১২টি আসনের সমবায়ে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৫৮০। ভোট পড়েছে ৫২৬। শুক্রবার দিনভর চরম উত্তেজনার মধ্যেই ভোটগ্রহণ হয়। এদিনের নির্বাচনে সমবায়ের বোর্ডটি দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ইন্দুভূষণ প্রধান বলেন, "বিজেপির সঙ্গে যে সাধারণ মানুষের কোনও যোগাযোগ নেই, তা আজকের সমবায়ের ফলাফলেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর থেকে পরিষ্কার বিজেপি কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসাতেই টিকে আছে। ভোটে লড়াই করার ক্ষমতা ওদের নেই।" বিজেপির এগরা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তাপস দে বলেন, "এটা সম্পূর্ণভাবে স্থানীয় নেতৃত্বের দেখার বিষয়। তবে ঠিক কোন কারণে এমন ফলাফল হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।"
অপরদিকে, ভগবান ১ ব্লকের শটুপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন কমিটির ১২টি আসনে ভোট হয়। মোট ভোটার ৫৭১ জন। ফলাফল ঘোষণা হতেই দেখা যায়, ৯টি আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা। বাকি ৩টি আসনে 'জোট প্রার্থী'রা জয়লাভ করে। অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূলকে পরাজিত করার জন্য সিপিএম ও বিজেপি গোপন আঁতাঁত করে। ফলে তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি লড়াই হয় বিরোধীদের।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি ঘটে।এদিনের সমবায় ভোটেও ফের হার বিজেপিকে ভাবাচ্ছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। ভগবানপুর ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি রবীনচন্দ্র মণ্ডল বলেন, "সিপিএম-বিজেপি সম্মিলিতভাবে তৃণমূলকে পরাজিত করার লড়াইয়ে নেমেছিল। কিন্তু মানুষ উত্তর দিয়েছেন। কারণ, বাংলার মানুষ উন্নয়নের পাশে রয়েছে বলেই বারবার তৃণমূলকে সমর্থন করে বার্তা দিয়েছেন।" কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলেন, "সমবায় ভোটে জোটের কোনও বিষয় নেই। বিজেপি সমবায় ভোট নিয়ে ভাবছে না। মাটি ধরে রাখতে তৃণমূলের এখন ভরসা সমবায়।"