সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টেট প্রার্থীদের কাছ থেকে ৭.২০ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগে ধৃত রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সরব হলেন। শনিবার বিধাননগর উত্তর থানায় দিনভর ম্যারাথন জেরার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিবার তাঁকে বিধাননগর আদালতে পেশ করা হয়। এদিনে বিধাননগর কমিশনারেটের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা থেকে তাঁকে বের করে আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে সংবাদমাধ্যমের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। জয়প্রকাশের মন্তব্য, ‘পুরোটাই ষড়যন্ত্র, দিদির কীর্তি!’
গ্রেপ্তার বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার
শনিবার রাতেই জয়প্রকাশের গ্রেপ্তারির ঘটনাকে প্রতিহিংসার রাজনীতি বলে কটাক্ষ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে তাঁর এও আশঙ্কা, ভুয়ো মামলা দায়ের করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে রাজ্য বিজেপির অন্যান্য নেতা-নেত্রীদেরও গ্রপ্তার করতে পারে সরকার। তাই মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির সদর দপ্তরের ইতিউতি একটাই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে, জয়প্রকাশের পর এবার কে? অন্যদিকে, মামলা সংক্রান্ত কিছু নথি রবিবার সকালে বিধাননগর উত্তর থানায় এসে জমা দেন জয়প্রকাশের মেয়ে। কিন্তু তিনি থানা বেরিয়ে যাওয়ার সময় ফের তাঁর গাড়ি আটকায় পুলিশ। এবং কিছু না জানিয়ে চলে যাওয়ার জন্য তাঁকে ফের থানায় নিয়ে এসে বসিয়ে রাখা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মামলা সংক্রান্ত বেশ কিঠু গুরুত্বপূর্ণ নথি জয়প্রকাশের বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলা হতে পারে। তাই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সম্ভাবনার কথা জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে মামলা করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশ কয়েক জন টেট প্রার্থীর কাছ থেকে ৭.২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার৷ জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে গত ২৮ আগস্ট বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন টেট পরীক্ষার্থীদের সংগঠনের আহ্বায়ক অরূপ রতন রায় নামে এক ব্যক্তি৷ তাঁর লিখিত অভিযোগ ছিল, টেট পরীক্ষার্থীদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করিয়ে দেওয়ার নাম করে ওই অর্থ নেন জয়প্রকাশ মজুমদার৷ মামলার জন্য কোনওরকম তদ্বির তো তিনি করেননি, উল্টে দীর্ঘদিন ধরে টাকা আটকে রেখেছিলেন জয়প্রকাশবাবু৷
এরপর ওই পরীক্ষার্থীরা টাকা চাইতে গেলে তাঁদের মারধর করে তাড়িয়ে দেন জয়প্রকাশবাবু৷ এরপরই বিধাননগর উত্তর থানায় জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অরূপবাবু৷ এই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ৷ জানা গিয়েছে, দু’দিন আগে বৃহস্পতিবার জয়প্রকাশবাবুকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়৷ তিনি যাননি৷ এরপর শুক্রবারেও তাঁকে ডাকা হয় থানায়৷ নিজে না গিয়ে তাঁর আইনজীবীকে থানায় পাঠান জয়প্রকাশ মজুমদার৷ শনিবার সকাল ১১টায় অবশ্য নিজেই থানায় হাজিরা দিয়েছেন তিনি৷ তারপর থেকেই দীর্ঘক্ষণ তাঁর বয়ান রেকর্ড করে পুলিশ৷ পড়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
The post ‘পুরোটাই ষড়যন্ত্র, দিদির কীর্তি’, আদালতের পথে অভিযোগ জয়প্রকাশের appeared first on Sangbad Pratidin.