ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ভোটের মুখে কেন্দ্রকে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল যক্ষ্মার ওষুধ। দেশে যক্ষ্মার ওষুধ তলানিতে। স্বাভাবিক নিয়মে যক্ষ্মা রোগীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। ওষুধ শেষ হলে কীভাবে চিকিৎসা চলবে তা নিয়ে রীতিমতো জটিলতা শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরে।
জাতীয় যক্ষ্মা নির্মূল কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী দেশে মাত্র দু’সপ্তাহের টিবির ওষুধ আছে। অবস্থা এতটাই সঙ্কটে যে রাজ্যগুলিকে যক্ষ্মার রুটিন ওষুধ কিনতে প্রস্তাব দিল দিল্লি। এহেন অবস্থায় টিবি মুক্ত দেশ- এমন চলতি কর্মসূচি কতটা সফল হবে? তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে।
ন্যাশনাল টিবি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের তথ্য বলছে, দেশে প্রায় ২৬ লক্ষ টিবি রোগী আছে। যাঁদের নিয়ম করে ওষুধ খেতে হয়। গত সপ্তাহে ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে রাজ্যগুলির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। সেই সময় দিল্লির কর্তারা কার্যত স্বীকার করে নেন যক্ষ্মা রোগের চারটি ওষুধ নিঃশেষ হতে বসেছে। বৃহস্পতিবারও স্বাস্থ্য সচিব আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন। ফের দিল্লিকে ওষুধ চেয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যে চারটি ওষুধের আকাল সেগুলি হল, ১) রিফামপিসিন (RIFAMPICIN), ই থামবুটল ( E THAMBUTOL), আইএনএইচ (INH), পাইরাজিনামাইড (PyRAZINAMIDE) এর মধ্যে প্রথম দুটি ওষুধ দুমাস এবং পরের দুটি চার মাস রোগীকে খেতে হয়।
[আরও পড়ুন: ঘনঘন রোগে ভুগছে শিশু? ভালো খাবার খেয়েও কেন এমন অবস্থা?]
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী যক্ষ্মা নোটিফায়েড ডিজিজ। অত্যন্ত সংক্রামক। রোগ চিহ্নিত হলেই নিঃসকয় পোর্টালে রোগীর নাম নথিভুক্ত করা হয়। রোগীর ওষুধ ও পথ্য কেন্দ্রীয় সরকার দেশে সরবরাহ করে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে চার ওষুধের এহেন তীব্র সঙ্কটে প্রমাদ গুনছে স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ইতিমধ্যে চারটি ওষুধ সরবরাহ করার জন্য দিল্লিতে চিঠি পাঠিয়েছে। ন্যাশনাল হেলথ মিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা.সুশীলকুমার বিমল ওষুধের অপ্রতুল জোগানের কথা স্বীকার করলেও দায় ঠেলেছেন যক্ষ্মা নির্মূল কর্মসূচির ঘাড়ে।
‘নিঃসকয়’ পোর্টাল অনুযায়ী রাজ্যে টিবি রোগীর সংখ্যা প্রায় ১.৫০ লক্ষ। এদের মধ্যে অন্তত ৫০ হাজার রোগীর নিয়মিতভাবে চারটি ওষুধ খেতে হয়। টিবি নির্মূল কেন্দ্র অথবা জেলা হাসপাতাল থেকে নিখরচায় ওষুধ দেওয়া হয়। এমনকী হাসপাতালে আসতে না পারলে আশা কর্মীদের মাধ্যমে ওষুধ পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হয়। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য দপ্তর কর্মসূচি চালিয়ে যেতে রাজ্য কোষাগার থেকে অর্থ বরাদ্দ করেছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেছেন, যেসব রোগী চিকিৎসাধীন তাঁদের ওষুধ কেনার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা কী হবে তা ঠিক হয়নি।