ধীমান রায়, কাটোয়া: রাজ্যে এবং দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড হারে হয়েছে করোনা সংক্রমণ। পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরতে শুরু করার পর থেকে সংক্রমণ বাড়ছে বলেই দাবি অনেকের। আর তার ফলে ভিনরাজ্য ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে অনেককেই। ঠিক সেভাবেই গ্রামবাসীদের বাধার মুখে শ্মশানেই ঠাঁই হল মহারাষ্ট্র ফেরত দুই যুবকের।
পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা উৎপল ও তার ভাই বিশ্বজিৎ মাসছয়েক আগে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে একটি সংস্থায় মেকানিক্যাল বিভাগে কাজে যোগ দেন। সেই থেকে তাঁরা সেখানেই ছিলেন। উৎপলবাবু বলেন, “নাগপুরে পুরসভার কাছে আবেদন জানালে তাঁরা ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করে দেয়। গত বুধবার বর্ধমান স্টেশনে নামার পর আমাদের বর্ধমান কৃষি খামারে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সেখানেই লালারসের নমুনা নেওয়া হয়েছিল।ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। শনিবার সকালে আমাদের বলে দেওয়া হয়, তোমাদের করোনা হয়নি। বাড়ি চলে যাও। বাড়িতে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তারপর গ্রামে আসি।”
[আরও পড়ুন: করোনার থাবাতেও হুঁশ নেই, পুরুলিয়ায় আক্রান্তের গ্রামেই চলছে ক্রিকেট, তাসের আড্ডা]
বিশ্বজিৎ বলেন, “গ্রামের কাছে আসার পরেই গ্রামের বাইরে আমাদের আটকে দেওয়া হয়। গ্রামের লোকজন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আমাদের গ্রামে থাকা যাবে না। যখন জানতে চাই কোথায় থাকব? তখন গ্রামের লোকজন ঠিক করে দেয় শ্মশানের ঘরে থাকা যাবে।” মাসআটেক আগে বিয়ে হয়েছে উৎপলবাবুর। তিনি জানিয়েছেন তার স্ত্রীর সঙ্গেও মুখোমুখি দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন গ্রামের লোকজন। তাই আপাতত শ্মশানেই সংসার পেতেছেন দুই ভাই। শনিবার দুপুর থেকে শ্মশানেই রয়েছেন তাঁরা। মেলেনি সরকারি ত্রাণ। যখন যেমন জুটছে নিজেরাই রান্না করে খাচ্ছেন শ্মশানের ঘরে।
ছবি: জয়ন্ত দাস
[আরও পড়ুন: করোনা সন্দেহে চিকিৎসা, মৃত্যু হাওড়া অর্থোপেডিক হাসপাতালের ফার্মাসিস্টের]
The post সংক্রমণের আশঙ্কায় বাড়িতে হয়নি জায়গা, শ্মশানেই ঠাঁই মহারাষ্ট্র ফেরত দুই ভাইয়ের appeared first on Sangbad Pratidin.