অভিরূপ দাস: বেসরকারি হাসপাতালে করোনা (Corona Virus) চিকিৎসায় খরচের সীমা বেঁধে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। করোনা রোগীর চিকিৎসকদের কনসালট্যান্ট ফি এবং পিপিই-সহ প্রোটেক্টিভ গিয়ারের খরচ একদিনে কত হতে পারে, তা ঠিক করে দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই নির্দেশিকা না মেনে, ইচ্ছেমতো বিলের অঙ্ক বাড়িয়ে এবার স্বাস্থ্য কমিশনের (Health Commission) কোপে শহরের দুই বেসরকারি হাসপাতাল। শাস্তিস্বরূপ বেহালা এবং তপসিয়ার দুটি হাসপাতালকেই ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করল স্বাস্থ্য কমিশন।
বেহালা ম্যান্টনের অ্যাপেক্স ক্লিনিক প্রাইভেট লিমিটেড এবং তপসিয়ার ফ্লেমিং হাসপাতাল, এই দুটি হাসপাতালকেই জরিমানা করেছে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রথমবার গাফিলতি ধরা পড়ায় খুব কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল না। তবে আবার যদি এদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আসে, দুই হাসপাতালেরই লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।
[আরও পড়ুন: হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার চিনা সামগ্রী, নজরে রেলের পার্সেল পরিষেবা]
গোপাল সাউ নামে এক কোভিড রোগী ভরতি ছিলেন বেহালা ম্যান্টনের অ্যাপেক্স হাসপাতালে। ৬ লক্ষ টাকা বিল হয়েছিল তাঁর। স্বাস্থ্য কমিশনে দায়ের করা অভিযোগে গোপালবাবুর অভিযোগ ছিল, প্রচুর বিল করেছে হাসপাতাল। এমনকি বিল পুরো মেটাতে না পারায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হচ্ছিল না। শেষমেশ আইনি সাহায্য নিয়ে তিনি হাসপাতাল থেকে বেরতে পারেন। সেই বিল খতিয়ে দেখতে গিয়েই কমিশনের চক্ষু চড়কগাছ। মাস্ক, গ্লাভস এমনকি সামান্য স্যানিটাইজারের জন্যও মোটা টাকা বিল করেছে অ্যাপেক্স! অথচ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন তাদের অ্যাডভাইজরিতে আগেই বলেছিল, বেসরকারি হাসপাতাল প্রতিদিন পিপিই এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বাবদ ১ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না।
করোনা চিকিৎসার বিল সংক্রান্ত এমনই অভিযোগ মিলেছে তপসিয়ার ফ্লেমিং হাসপাতালের বিরুদ্ধেও। সেখানে রিজওয়ান আমির নামে এক ব্যক্তি ভরতি ছিলেন। অভিযোগ, তাঁর কাছে বেড-ভাড়া বাবদ প্রতিদিন ১৭ হাজার টাকা নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “অনেক প্রথম সারির সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও এত বেড ভাড়া নয়। আমাদের নজরে আসার পরেই ওই বেড ভাড়া কমিয়ে ৬ হাজার টাকা করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: শ্বাসনালীতে দুধ ঢুকে মৃত্যু শিশুর, হাসপাতালকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা স্বাস্থ্য কমিশনের]
স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন আগেই জানিয়েছিল সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালকে চলতি বছরের মার্চের ১ তারিখে নির্দিষ্ট করা বেড ভাড়াই নিতে হবে। কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারও জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য কমিশন অ্যাডভাইজরি দেওয়ার পরে তা মানা হচ্ছে না, এরকম কোনও খবর পাইনি। এই প্রথম দুই বেসরকারি হাসপাতালকে চিহ্নিত করা গেল। অ্যাডভাইজরি না মেনে চলার খবর পেলে কমিশন অবশ্যই পদক্ষেপ নেবে। এই দুই হাসপাতালকেই জরিমানার মোট ৪০ হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রীর কোভিড রিলিফ ফান্ডে জমা দিতে বলা হয়েছে।
The post করোনা চিকিৎসায় রাজ্যের বেঁধে দেওয়া খরচের সীমা না মানায় শাস্তির মুখে ২ বেসরকারি হাসপাতাল appeared first on Sangbad Pratidin.