সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শিক্ষিকা দুজন, ছাত্রীসংখ্যা মাত্র তিন! অধিকাংশ দিনই বিদ্যালয়ে আসেন না ছাত্রীরা। স্কুলে গিয়ে ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে সময় কাটিয়ে বাড়ি চলে যান শিক্ষিকারা। বন্ধ মিড ডে মিলের (Mid day meal) রান্না। দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে এমনই অবস্থা চলছে পুরুলিয়া (Purulia) ২ নম্বর ব্লকের রাঘবপুর অঞ্চলের নডিহা জুনিয়ার মহিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের। তবুও হুঁশ নেই জেলা শিক্ষা দপ্তরের।
২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় নডিহা জুনিয়ার মহিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের। সেই সময় ৩ জন শিক্ষিকা এবং ২৫ জন ছাত্রী নিয়ে চালু হয় পঠনপাঠন। কিন্তু বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের ছাত্রীসংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ জনে এবং শিক্ষিকা রয়েছেন ২ জন। বেশিরভাগ দিনই অনুপস্থিত থাকেন ছাত্রীরা। শিক্ষিকা (Teachers) প্রতিদিন বিদ্যালয়ের আসেন, ঘড়ি দেখে সময় পার করে বাড়ি চলে যান।
[আরও পড়ুন: ‘রামমন্দির বিধির লিখন, আমি সারথী মাত্র’, বলছেন আগে ডাক না পাওয়া আডবাণী]
ছাত্রীদের ভর্তি না হওয়ার কারণ, এই বিদ্যালয়ের প্রায় ৩ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে তিনটি উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে পর্যাপ্ত শিক্ষিক-শিক্ষিকা রয়েছেন, শিক্ষার পরিকাঠামোও ভালো। তাই ছাত্রীদের পঠনপাঠনের সুবিধার্থে সেই সমস্ত উচ্চ বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রীদের ভর্তি করান অভিভাবকরা। কিন্তু নডিহা জুনিয়ার মহিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম থেকেই নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকা, শিক্ষার পরিকাঠামো নেই। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর অন্যান্য বিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় ছাত্রীদের। আর তাই ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এই বিদ্যালয়কে উপেক্ষা করে অন্যান্য বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের ভর্তি করান থাকেন অভিভাবকরা।
[আরও পড়ুন: রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার জন্য কেন ২২ জানুয়ারিকেই বেছে নেওয়া হল?]
তবে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা বছরের পর বছর জেলা শিক্ষা দপ্তর, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক, স্থানীয় ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছেন বার বার। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি । তাই নিজেদের চাকরি ধরে রাখতে নিত্যদিন বিদ্যালয়ে সময় কাটাতে আসেন শিক্ষিকারা । কিন্তু বিদ্যালয় প্রায়দিনই থাকে ছাত্রী শূন্য! বিদ্যালয়ের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় শিক্ষিকারা। বিদ্যালয়ের এই অবস্থার কথা মেনে নিয়ে পুরুলিয়া ২ নম্বর ব্লকের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক উজ্জ্বল কুমার দাস জানান, বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, আবারও জানানো হবে ।
দেখুন ভিডিও: