অর্ণব দাস, বারাসত: সান্দাকফু বেড়াতে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হলেন অশোকনগরের বাসিন্দা দুই ট্যুর অপারেটর দীপেশ সাহা এবং বাবাই দে। রবিবার সকালে দীপেশবাবু তাঁর পরিবারকে পথ হারানোর কথা জানালেও তারপর থেকে দু’জনেরই কোনও খোঁজ মেলেনি। এমন ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন পরিবার। পর্যটকরা আবার ট্যুর অপারেটরদের বিরুদ্ধে অব্যবস্থার অভিযোগও তুলেছেন। যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিখোঁজ দীপেশ সাহার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের জাগরনি ক্লাব সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা দীপেশ সাহা (৪৮) এবং বাবাই দে (৩৬)। এঁরা লোকজনদের মাঝেমধ্যেই ভ্রমণে নিয়ে বের হয়ে পড়তেন। গত ২৪ মে অশোকনগর থেকে ১৫ জনের একটি পর্যটক দল সান্দাকফু বেড়াতে যায়। এই দলেরও ট্যুর অপারেটর ছিলেন দীপেশ এবং বাবাই। ২৬ মে তাঁরা রওনা দেন সান্দাকফুর উদ্দেশে। ২৮ মে সকালে সান্দাকফু থেকে যাত্রা শুরু করে বেলা সাড়ে ১১টায় চলে আসেন কালাপোখরি। ওই দিনই রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যান দুই ট্যুর অপারেটর।
[আরও পড়ুন: ‘এরকম মধ্যপ্রদেশ বানালেন কীভাবে?’, পুরপ্রধানের পেল্লাই ভুঁড়ি দেখে প্রশ্ন মমতার]
পরেরদিন অর্থাৎ রবিবার সকালে দীপেশ সাহা একবার তাঁর স্ত্রী স্বপ্না সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে স্বপ্নাদেবী বলেন, “স্বামী ফোন করে জানিয়েছিল ওরা দু’জন কালাপোখরি জঙ্গলে গিয়ে পথ হারিয়েছে। শনিবার রাতে ওরা ওই জঙ্গলেই ছিল। ওদের কাছে খাবার কিংবা জল কিছুই নেই। দ্রুত ওদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করতেও বলেছিল।” পর্যটকদের একটা পরিবার ফিরে এলেও অধিকাংশ পর্যটক এখনও রয়েছেন কালিম্পংয়ে।
এদিন কালিম্পং থেকে ধীমান রায় নামে এক পর্যটক বলেন, “কালাপোখরির হোটেলেও দীপেশ এবং বাবাই এসেছিল। কিন্তু শনিবার বিকেলে আমরা বুঝতে পারি ট্যুর অপারেটর এবং তার সঙ্গী নিখোঁজ। ওদের রুমেও তালা দেওয়া, তবে ভিতরে জিনিসপত্র রয়েছে। ফোনেও যোগাযোগ করতে পারিনি। কীভাবে দু’জন নিখোঁজ হয়ে গেলেন,সেটাই রহস্যের।” ট্যুর অপারেটররা পর্যটকদের ঠিকঠাক খেয়াল রাখতেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পর্যটকরা সুখিয়াপোখরি থানায় এবং এসএসবি ক্যাম্পের জওয়ানদের কাছেও বিষয়টি জানিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। যদিও পর্যটকদের অব্যবস্থার এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিখোঁজ দীপেশ সাহার স্ত্রী স্বপ্না সাহা বলেন, “এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। অপপ্রচার করছেন পর্যটকরা।”
[আরও পড়ুন: আইপিএলে ভাল কাজের স্বীকৃতি, পিচ কিউরেটর-মাঠকর্মীদের বিরাট অর্থ পুরস্কার দিচ্ছে BCCI]
এবিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর শ্রীকান্ত চৌধুরী বলেন, “নিখোঁজ দু’জনকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি রবিবার দু’জনের মোবাইলের লোকেশন ছিল কালাপোখরির জঙ্গলে।” বিধায়ক নারায়ন গোস্বামী বিষয়টি জানার পর জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানা গিয়েছে।