shono
Advertisement

দুই পড়শি মুলুক থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের ছক দায়েশের

সীমান্তে নজরদারির পাশাপাশি নজর রাখা হচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে৷
Posted: 05:23 PM Jul 04, 2016Updated: 11:53 AM Jul 04, 2016

নন্দিতা রায়: বাংলাদেশ ও পাকিস্তান, এই দুই পড়শি দেশের মধ্য দিয়েই ভারতে অনুপ্রবেশ করার ছক কষেছে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া বা আইএসআইএস (আরবি ভাষায় যাদের নাম ‘দায়েশ’)৷ ভারত থেকে লোক নিয়ে গিয়ে সিরিয়াতে যুদ্ধে প্রশিক্ষণ দেওয়া এর আগে দায়েশের লক্ষ্য ছিল ঠিকই, কিন্তু এখন তারা এদেশে নিজেদের জাল বিস্তারের জন্য অন্য রাস্তা অবলম্বন করেছে বলেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অনুমান৷ সম্প্রতি আইএস-র সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এই সন্দেহে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ যাদের গ্রেফতার করেছে তাদের জেরা করেই মডিউলের সন্ধান মিলেছে৷ গোয়েন্দাদের দাবি, নিয়োগ পদ্ধতিতে বেশ কিছু রদবদল করেছে দায়েশ৷ আগে নিজস্ব ওয়েবসাইট ও প্রোপাগান্ডা পত্রিকার মাধ্যমে দায়েশ সিরিয়ায় ‘জেহাদ’-এর জন্য লোক ভাড়া করত৷ এখন তারা বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইটগুলিকেই জঙ্গি কাজকর্মে লোক নিয়োগের মাধ্যম করেছে বলেই সূত্রের খবর৷

Advertisement

বিশেষ করে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবক যুবতীদের চাকরির টোপ দিয়ে নিজেদের কাজে লাগানোর ছক কষেছে তারা৷ এই যুবক যুবতীরা প্রথমে বুঝতেই পারবে না, তারা আসলে কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন দায়েশের হয়ে কাজ করছে৷ একসময় মুম্বই অপরাধ জগতে ‘সুপারি’ দেওয়ার খুব চল ছিল৷ টাকা নিয়ে কোনও খুন বা হত্যা করার মতোই ‘সুপারি’ পদ্ধতি ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের দিয়েই ভারতে হামলা চালাতে পারে দায়েশ, মনে করছেন গোয়েন্দারা৷ সদ্য গত সপ্তাহেই হায়দরাবাদে এনআইএ তল্লাশি চালিয়ে একথাও জানতে পেরেছে যে, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ভারতে হাত মিলিয়েছে দায়েশ৷ ঠিক যেমন বাংলাদেশে জামাত উল মুজাহিদিন, জেএমবিকে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় সন্ত্রাস চালানো হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তেমনই ভারতে আগে থেকেই সক্রিয় রয়েছে এমন জঙ্গি সংগঠনগুলিকে দিয়ে নিজেদের কাজ হাসিল করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের৷ সিরিয়ায় গিয়ে ‘যুদ্ধ’ করছে এমন ভারতীয়দের থেকেও এখন এই নতুন মডিউলই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের বেশি মাথাব্যথার কারণ বলেই জানা গিয়েছে৷

এছাড়াও জেএমবিকে নিয়েও চিন্তায় রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি৷ পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জেএমবি যোগাযোগের তথ্য মিলেছে৷ পশ্চিমবঙ্গ-সহ অসম, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশাতেও জেএমবি জাল ছড়িয়েছে বলেও এনআইএ-র হাতে তথ্য রয়েছে৷ জেএমবি-র হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের মতো বাংলাদেশের সঙ্গে সীমানা ভাগ করে রয়েছে এমন রাজ্যগুলি দিয়ে ইসলামিক স্টেট তথা দায়েশ এদেশে প্রবেশের চেষ্টা করবে বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা৷ তাই সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোনিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে৷ তবে, শুধুমাত্র সীমান্ত দিয়েই যে বিপদ আসতে পারে তা নয়, দেশের মধ্যেও যাতে দায়েশ জাল বিস্তার না করতে পারে তার জন্য চাকরির ওয়েবসাইটগুলির দিকে কড়া নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির৷ ‘ফ্রিল্যান্স জেহাদি’ নিয়োগ করার যে নতুন মডিউল জঙ্গি সংগঠনগুলি নিয়েছে তাতে লাগাম দেওয়াই এখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ৷ সীমান্তে নজরদারির পাশাপাশি নজর রাখা হচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement