সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেহাদিদের আতঙ্কে কাঁপছে আফগানিস্তান (Afghanistan)। কাবুল বিমানবন্দরে হামলার ক্ষত এখনও দগদগে। আর এই ডামাডোলের মধ্যেই সন্ত্রাস নিয়ে বিবৃতি দিল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (UNSC)। আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই বিবৃতিতে নেই সন্ত্রাসবাদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক তালিবানের নাম।
[আরও পড়ুন: Pakistan Taliban: ভারতকে বিপাকে ফেলতে তালিবান তৈরি করে পাকিস্তান, দাবি প্রাক্তন আফগান রাষ্ট্রদূতের]
গত বুধবার রাতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল বিমাবন্দর। ওই হামলায় ১৩ মার্কিন সেনা-সহ নিহত হয় ১৮০ জন মানুষ। তারপরই আগস্টের ২৭ তারিখ বিবৃতি দেয় রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে বলা হয়, "আবারও আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিতে চায় রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলি। আফগানিস্তানের জমি ব্যবহার করে অন্য দেশকে হুমকি দেওয়া বা হামলার মতো ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে। এবং আফগানিস্তানের জমি থেকে সন্ত্রাস ছড়ানোর কাজে কাউকে যেন কোনও ব্যক্তি বা আফগান সংগঠন মদত না দেয়।" তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তালিবান ও ইসলামিক স্টেট-সহ অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সম্পর্কের কথা বারবার উঠে এলেও নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে তালিবানের নাম উল্লেখ করা নেই।
বলে রাখা ভাল, আগস্টের ১৫ তারিখ কাবুল দখল করে তালিবান। তার পরের দিন এক বিবৃতি জারি করে সরাসরি তালিবানের নাম উল্লেখ করে নিরাপত্তা পরিষদ দাবি করেছিল, তালিবান যেন কোনও জঙ্গি সংগঠনকে মদত না দেয়। অথচ দু'সপ্তাহ পরই এহেন ইউটার্ন নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "কুটনীতিতে দুই সপ্তাহ অনেক লম্বা সময়। 'টি' শব্দটি আর নেই। আগস্টের ১৬ ও ২৭ তারিখ নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি দুটি মিলিয়ে দেখুন।"
উল্লেখ্য, এক মাসের জন্য রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ভারত। ২০২১-২২ সালে প্রথমবারের জন্য এই দায়িত্ব নিল ভারত। ফ্রান্সের হাত থেকে ১ আগস্ট ভারত রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তার পরিষদের সভাপতিত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে ভারতের কার্যকাল শুরু হয়েছে ২ আগস্ট থেকে। ফলে ২৭ তারিখের বিবৃতিতে ভারতের সই রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সময়ের সঙ্গে আফগানিস্তানে তালিবানের (Taliban) শাসন মেনে নিচ্ছে বিশ্ব। বিশেষ করে চিন ও রাশিয়ার মৌন সম্মতির পর বাকিরাও তালিবদের মান্যতা দেওয়ার পথেই হাঁটবে। আপাতত 'ধীরে চল নীতি' নিলেও শেষমেশ আফগানভূমে নিজের স্বার্থরক্ষায় সমঝোতার পথেই হাঁটতে হতে পারে নয়াদিল্লিকে। ফলে আপাতত নীরব দর্শক হয়ে থাকা ছাড়া ভারতের সেই অর্থে করার কিছু নেই।