সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভুয়ো নথি ব্যবহার করে আইএএস হয়েছেন পূজা খেদকার! বিতর্ক চরম আকার নিতেই তাঁর প্রশিক্ষণে জারি করা হয়েছিল স্থগিতাদেশ। এবার পূজার বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপের পথে ইউপিএসসি। নাম-পরিচয় গোপন করে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে পূজাকে নোটিস পাঠাল ইউপিএসসি। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর।
নির্ধারিত সীমার বেশিবার পরীক্ষা দিতে নাম, পরিচয় ও বয়স বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল পূজার বিরুদ্ধে। এই মর্মেই পূজাকে ইউপিএসসি-র তরফে নোটিস পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে কেন তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল করা হবে না। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর কোনও সরকারি চাকরির পরীক্ষাতে যাতে অভিযুক্ত বসতে না পারে সে বিষয়েও পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছে কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে চাকরি হারানোর আশঙ্কা আরও প্রবল হতে চলেছে পূজার জন্য। শুধু তাই নয় জালিয়াতি করে পরীক্ষার নিয়মভাঙার অভিযোগে পূজার বিরুদ্ধে পুলিশের এফআইআর দায়ের করেছে ইউপিএসসি।
তদন্তকারীদের দাবি, ২০২০ সালে তাঁর ব্যবহৃত নাম ছিল খেদকার পূজা দিলীপরাও। বয়স লেখা ছিল ৩০। আবার ২০২৩ সালের পরীক্ষায় নাম পূজা মনোরমা দিলীপ খেদকার। বয়স ৩১। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তিন বছরে মাত্র এক বছর বয়স কী করে বাড়ল! আসলে ইউপিএসসিতে জেনারেল ক্যাটাগরির প্রার্থী ৩২ বছর বয়সের মধ্যে ৬ বার পরীক্ষা দিতে পারেন। আবার ওবিসি প্রার্থীরা ৩৫ বছরের মধ্যে ৯ বার পরীক্ষায় বসতে পারেন। সূত্রের দাবি, পূজা মোট ১১ বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। অভিযোগ প্রতিবার পরীক্ষা দেওয়ার সময় নিজের নাম ও বয়েস ভাঁড়িয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, চাকরি পেতে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করেছেন অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, MBBS কোর্সে ভর্তির সময় কলেজে যে ‘ফিট সার্টিফিকেট’ জমা দেন পূজা, সেখানে তাঁকে শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ তথা স্বাভাবিকই বলা হয়েছিল। সার্টিফিকেটে বলা হয়, ‘তাঁর এমন কোনও রোগের ইতিহাস নেই যা তাঁকে পেশাদার কোর্সে করতে বাধা দিতে পারে। এছাড়াও ক্লিনিকাল পরীক্ষায় প্রমাণিত যে তিনি কোর্সটি করার জন্য মেডিক্যালি উপযুক্ত।’
[আরও পড়ুন: তদন্তে লাগবে আগাম অনুমতি, বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশেও CBI-এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন!]
উল্লেখ্য, পূজা খেদকারকে নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত চাকরি পাওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে। ২০২৩ সালের ব্যাচের শিক্ষানবিশ আমলা পূজার মহারাষ্ট্রের পুণেতে অ্যাসিসট্যান্ট কালেক্টর হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রবেশনারি আইএএস অফিসারদের যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা নয়, তা নিচ্ছিলেন তিনি। নিজের অডি গাড়িতে লালবাতি এবং মহারাষ্ট্র সরকারের বোর্ড লাগিয়ে ঘুরতেন। যদিও সেই অনুমতি নেই প্রবেশনারি আইএএস অফিসারদের। শুধু তাই নয়, অ্যাডিশনাল কালেক্টর অজয় মোরের অনুমোদন ছাড়াই তাঁর অফিসের আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলে অফিসের একাংশ দখল করেন বলেও অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি রেভিনিউ অ্যাসিসট্যান্টকে পূজা নির্দেশ দেন, লেটারহেড দিতে হবে তাঁকে। ঘরের বাইরে রাখতে হবে নেমপ্লেট। আরও জানিয়ে দেন, সিনিয়ার আধিকারিকদের মতোই সুযোগ সুবিধা দিতে হবে তাঁকে। আবদারের এই ঘনঘটার মধ্যেই পূজাকে ওয়াশিম জেলায় বদলি করা হয়।