সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় আমেরিকা! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন এক ইজরায়েলি আধিকারিক। হামাস নিধনে গত পাঁচ মাস ধরে গাজায় তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। সেখানে প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে পড়েছে তেল আভিভ। আমেরিকার অন্দরেও ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। ফলে ওই আধিকারিকের এহেন অভিযোগকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
কয়েকদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন নেতানিয়াহুর কার্যকলাপই নাকি ইজরায়েলের বিপদ ডেকে আনছে। এর পরই আমেরিকার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ওই ইজরায়েলি আধিকারিক। রয়টার্স সূত্রে খবর, মঙ্গলবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই উচ্চপদস্থ ব্যক্তি টাইমস অফ ইজরায়েলের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধ আবহেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করতে চায় আমেরিকা। এই মুহূর্তে ওয়াশিংটন নাকি সেই চেষ্টাই করছে। বাইডেন প্রশাসন তোপ দেগে তিনি বলেন, “ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচন করেছেন ইজরায়েলের মানুষ। অন্য কেউ নয়। ইজরায়েল গণতান্ত্রিক দেশ। কখনও আমেরিকার সুরক্ষাকবজে ছিল না ইজরায়েল।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি আমাদের বন্ধুরা হামাস জঙ্গিদের সন্ত্রাসী শাসনকে উচ্ছেদ করবে। ইজরায়েলের নির্বাচিত সরকারকে নয়।”
[আরও পড়ুন: লিথুয়ানিয়ায় নাভালনির ঘনিষ্ঠ সহযোগীর উপর প্রাণঘাতী হামলা, নেপথ্যে কী রাশিয়া?]
ইজরায়েলের উপর হামাসের বেনজির হামলা এবং তার পালটা দিয়ে গাজায় ইজরায়েলি সেনার অভিযান- এই দুই ক্ষেত্রেই শুরু থেকে নেতানিয়াহুর দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। কিন্তু গত মাস দেড়েক ধরে একাধিকবার গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যু নিয়ে ‘নেতানিয়াহু-বিরোধী’ সুর শোনা গিয়েছে বাইডেনের কথায়। কয়েকদিন আগেই তিনি বলেছিলেন, “ইজরায়েলকে রক্ষা করার দায়িত্ব রয়েছে নেতানিয়াহুর উপর। হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর অধিকারও রয়েছে তাঁর। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথাও তাঁকে মাথায় রাখতে হবে। নেতানিয়াহুর পদক্ষেপের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাজার আমজনতা। আমার মনে হয় ইজরায়েলের সাহায্য করতে গিয়ে আখেরে দেশের ক্ষতিই করছেন নেতানিয়াহু।” এর পরই নানা মহলে আলোচনা শুরু হয় যুদ্ধ আবহে কি ইজরায়েলের পাশ থেকে সরে আসবে হোয়াট হাউস?
বলে রাখা ভালো, ইজরায়েলের হামলায় প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বহু আমেরিকানদের মধ্যে। পলিটিকোর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, তরুণ ডেমোক্রেটরা ইজরায়েলকে খুব একটা ভালো চোখে দেখে না। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বাইডেনের ৫০ শতাংশ ভোটারই ইহুদি দেশটির বিপক্ষে। গাজায় ইজরায়েলি বাহিনীর হামলাকে তাঁরা ‘গণহত্যা’বলে দাবি করছে। বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনকে মাথায় ইজরায়েলকে নিয়ে আর কোনও বিতর্কে জড়াতে চাইছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাই জনগণের কাছে নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন বাইডেন।