সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আকাশের বুক চিরে বিদ্যুৎরেখার খেলা দেখে সেই আদিমকাল থেকেই বিস্মিত ও শিহরিত হয়ে এসেছে মানুষ। বজ্রপাতের (Lightning) ঘটনায় ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছে। কিন্তু আধুনিক সময়ে বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতির ফলে সে মাপতে শিখে গিয়েছে বিদ্যুৎরেখা তথা বাজের দৈর্ঘ্য়ও। আর তার ফলে সেই বিস্ময়ের পরিমাণও বেড়েছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আমেরিকার (US) আকাশে এমন এক বজ্র দেখা গিয়েছে যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৭০ কিলোমিটার! এ এক অনন্য বিশ্বরেকর্ড।
তবে এই বজ্রপাতের ঘটনাটি আজকের নয়, বছর দুয়েক আগের। ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল আকাশজুড়ে দেখা গিয়েছিল ৭৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এক বজ্র! মিসিসিপি, লুসিয়ানা ও টেক্সাস জুড়ে আকাশে ঝলসে উঠেছিল সেই বজ্রপাত। মঙ্গলবার এই বিশ্বরেকর্ডের কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেন নিয়ে উত্তপ্ত রাষ্ট্রসংঘ! বাদানুবাদে জড়ালেন রুশ ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতরা]
রাষ্ট্রসংঘের অধীনস্থ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা WMO একটি বিবৃতি পেশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, নিউ ইয়র্ক ও ওহিও কিংবা লন্ডন থেকে জার্মানির শহর হামবুর্গের যে দূরত্ব তার সমান দূরত্বে আকাশপথে সৃষ্টি হয়েছিল ওই বজ্রের। এর আগে ব্রাজিলে এমন এক সুদীর্ঘ বজ্র দেখা গিয়েছিল। ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবরের সেই বজ্রও হার মেনেছে এই নয়া নজিরে। আগের বারের থেকেও ৬০ কিমি বেশি দীর্ঘ আমেরিকার আকাশে দেখা দেওয়া এই বজ্রটি।
নতুন রেকর্ড গড়েছে বিদ্যুৎরেখার স্থায়িত্বও। ২০২০ সালের ১৮ জুন উরুগুয়ে ও উত্তর আর্জেন্টিনার আকাশে যে বিদ্যুৎ চমকে উঠেছিল, সেই ঝলসানির স্থায়িত্ব ছিল ১৭.১ সেকেন্ড। আগের রেকর্ডও ছিল আর্জেন্টিনার আকাশের দখলে। ২০১৯ সালের ৪ মার্চ আর্জেন্টিনার আকাশে দেখা দেওয়া সেই বিদ্যুতের চেয়েও এটি ০.৩৭ সেকেন্ড বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে।
আসলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বজ্রপাতের ঘটনায় বহু প্রাণহানি ঘটে প্রতি বছর। গোটা বিশ্ব জুড়েই এই ছবি। তাই এই বিপদ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে বিজ্ঞানীরা লাগাতার নানা বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। সেই পরীক্ষার ফলশ্রুতিই সাম্প্রতিক এই পর্যবেক্ষণ।