সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাদাখ (Ladakh) সীমান্তে চিনা ফৌজের আগ্রাসনে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের মধ্যে বেশ কয়েক দফা আলোচনা চললেও সমস্যা মেটার কোনও সম্ভাবনা নিকট ভবিষ্যতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে যুদ্ধের জন্য সর্বক্ষণ প্রস্তুত থাকছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এহেন পরিস্থিতিতে লালফৌজের উপর নজরদারিতে ভারতীয় ফৌজকে মদত দিচ্ছে আমেরিকা বলে জানিয়েছেন এক শীর্ষ মার্কিন সেনকর্তা জেনারেল কেনেথ উইলসবাখ।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হওয়াতেই খুন? বালোচ তরুণীর মৃত্যুতে তদন্তের দাবি ভারতের]
ভারত-চিন সংঘাত নিয়ে মার্কিন বায়ুসেনার (US Pacific Air Forces) অন্যতম শীর্ষকর্তা উইলসবাখ বলেন, “এই বছর আমরা ভারতের আরও নিকটে চলে এসেছি। বিশেষ করে চিন সীমান্ত সংক্রান্ত ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং ও গোপন তথ্য আদানপ্রদানের বিষয়ে আমরা একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করছি। বন্ধু দেশ ভারতের জন্য আমরা সীমান্তে নজরদারি চালাতে মদত করছি।” বিশ্লেষকদের মতে, চিনা ফৌজের উপর নজর রাখতে গোড়া থেকেই ভারতকে মদত দিয়ে আসছে আমেরিকা। কারণ, তিব্বতে লালফৌজের উপর নজর চালাতে নয়াদিল্লির হাত ধরতে বাধ্য ওয়াশিংটন। এশিয়া মহাদেশে বেজিংয়ের আগ্রাসী পদক্ষেপ রুখতে হলেও ভারতের মদতের প্রয়োজন আমেরিকার। তাই লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষের আবহে সেই সুযোগ এসেছে মার্কিন ফৌজের হাতে। এছাড়াও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করে পরস্পরকে মদত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে দুই দেশ।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসে ভারত-আমেরিকা হাই-প্রোফাইল ২+২ বৈঠকে চিন বিরোধিতাকে সুসংহত চেহারা দিতে এবং কৌশলগত সম্পর্ককে আলাদা উচ্চতায় নিয়ে যেতে ঐতিহাসিক Basic Exchange and Cooperation Agreement for Geo-Spatial Cooperation (BECA) চুক্তি স্বাক্ষর করে দুই দেশ। এটি স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে, ভারতীয় ও মার্কিন ফৌজের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান আরও মজবুত হবে। ভারতের জন্য যেটা সবচেয়ে জরুরি তা হল, চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ায় মার্কিন মিলিটারি স্যাটেলাইট থেকে লাইভ ছবি পাবে ভারতীয় সেনা। লাদাখে সংঘর্ষের আবহে চিনা ফৌজের গতিবিধির উপর নজর রাখতে এটা অত্যন্ত প্রভাবশালী পদ্ধতি হবে। এছাড়া, অক্টোবরেই QUAD মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠকে মিলিত হয় ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা। এই দেশগুলি মিলে তৈরি হয়েছে এই গোষ্ঠী। এই বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা আগ্রাসন। এশিয়ায় চিনের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রশমিত করতে চায় আমেরিকা। এদিকে ভারতের সঙ্গে চিনের সম্পর্কও খুব ভাল পরিস্থিতিতে নেই। গত মে মাস থেকে লাদাখে সীমান্তের উত্তেজনায় আরও অবনতি হয়েছে সেই সম্পর্কে। এই পরিস্থিতিতে চিনের সঙ্গে লড়তে ভারতকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চায় আমেরিকা। দু’দেশের সম্পর্কও খুব ভাল জায়গায় রয়েছে।