সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War) ক্রমশ ঘোরাল হচ্ছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়ছেন লাখ লাখ মানুষ। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০ লক্ষ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলিতে। এই অবস্থায় উলটো কাণ্ড করে খবরে এক আমেরিকান নাগরিক। নিজের মেয়েকে বাঁচাতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে পোল্যান্ড সীমান্ত পেরিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ঢুকে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত কি মেয়েকে উদ্ধার করতে পারলেন বাবা?
আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের বাসিন্দা উইলিয়াম হাবার্ড (Willam Hubbard)। উইলিয়ামের মেয়ের নাম আসলিন (Aislinn)। তিনি ২০১৮ সালে কিয়েভের একটি কোরিওগ্রাফির কলেজে পড়তে আসেন। তখন তাঁর বয়স ১৬ বছর। মাঝে অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। মাস আটেক আগে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন আসলিন। কোভিড পরিস্থিতিতে হাসপাতালে নয়, ভাড়া বাড়িতেই সন্তান প্রসব করেন। ফলে প্রশাসনিক জটিলতায় মেলেনি সন্তানের জন্মের শংসাপত্র। আর তা না মেলায় ছেলের পাসপোর্টও করানো যায়নি।
[আরও পড়ুন: মিসাইল হামলায় জ্বলছে ইউক্রেন, সাময়িকভাবে পোল্যান্ডে দূতাবাস সরাচ্ছে ভারত]
এর মধ্যে সম্প্রতি রাশিয়া হামলা করে ইউক্রেনে। ইচ্ছে থাকলেও ইউক্রেন ছাড়তে পারছিলেন না আসলিন। একে তো লাগাতার রুশ বোমা বর্ষণের মধ্যে অতটুকু সন্তানকে নিয়ে সীমান্ত অবধি যাওয়া, তার উপর শিশু সন্তানের পাসপোর্ট না থাকা। সব মিলিয়ে ইচ্ছে থাকলেও অন্যদের মতো ইউক্রেন ছাড়তে পারছিলেন না আসলিন ও তাঁর সন্তান।
এদিকে গোটা ঘটনায় উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন আসলিনের বাবা উইলিয়াম হাবার্ড। তিনি শুরুতে আমেরিকা থেকেই মেয়ে ও নাতিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে পোল্যান্ড সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়েন ইউক্রেনে। কোনও মতে একটি ট্রেনে চেপে কিয়েভে পৌঁছান তিনি। অনেক কষ্টে স্নেহের সন্তানের সঙ্গে দেখা হয় পিতার। উইলিয়ামের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর পুঁচকে নাতিরও।
[আরও পড়ুন: ‘খোঁজ নিন ছেলে কোথায়, যুদ্ধে যেতে নিষেধ করুন’, রুশ মায়েদের অনুরোধ জেলেনস্কির]
ভাগ্য সুপ্রসন্ন পরিবারটির। মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে রুশ গোলায় ছাড়খাড় ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ড ডিঙিয়ে শুক্রবার পোল্যান্ডে সীমান্তে পৌঁছাতে পেরেছেন উইলিয়াম। এত বড় ঝুঁকি কীভাবে নিলেন, এই প্রশ্নের উত্তরে উইলিয়াম হাবার্ড বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে যে কোনও বাবা যা করতেন, আমিও তাই করছি।”