সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা (Rohingya) গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিল আমেরিকা। মায়ানমারের উপর চাপ বাড়িয়ে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে রোহিঙ্গাদের উপর চরম অত্যাচার চালিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বার্মিজ সেনাবাহিনী।
[আরও পড়ুন: ১ কেজির দাম ১৬ কোটি টাকা, বিশ্বের সবচেয়ে দামী! সোনায় মোড়া চায়ের চাষ বাংলাদেশে!]
সোমবার ওয়াশিংটনের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম পরিদর্শনের পর ব্লিঙ্কেন বলেন, “সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো হিংসা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রথম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচারকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিল আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ সচিব ব্লিঙ্কেন গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া সফরের সময় বলেছিলেন, “রোহিঙ্গাদের প্রতি মায়ানমারের আচরণ গণহত্যা কি না, তা খুবই সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।”
২০১৭ সালে মায়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের মুখে ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এরআগে চার লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেওয়া একলক্ষ রোহিঙ্গা শিশু-সহ বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এখন ১২ লক্ষ। এর ফলে বাংলাদেশের (Bangladesh) অর্থনীতির উপর বিপুল চাপ পড়ছে।
এদিকে, রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত রাষ্ট্রসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলছে। দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়। মায়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। রাষ্ট্রসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’ ২০১৮ সালে এই উপসংহারে পৌঁছায় যে মায়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কাজ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তখন ওয়াশিংটন এই নৃশংসতাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে এই শব্দবন্ধের কোনও আইনগত সংজ্ঞা নেই।