সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার কারাগারে মৃত্যু হয়েছে অ্যালেক্সেই নাভালনির। এমনটাই জানিয়েছে রুশ ফেডারেল জেল কর্তৃপক্ষ। ১৯ বছরের কারাদণ্ডের সাজায় জেলেই ছিলেন পুতিন-বিরোধী নেতা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। যদিও নাভালনির মৃত্যুর বিষয়ে এখনও কিছু জানেন না বলে দাবি তাঁর প্রেস সচিব কিরা ইয়ারমিশের। নাভালনির আইনজীবী দ্রুত ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে এবার রুশ নেতার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করল আমেরিকা।
নাভালনির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য, “এই ঘটনা রাশিয়ার সরকারের দুর্বলতার নিদর্শন। অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা উচিত।” একই মত হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের। তিনি জানিয়েছেন, “যদি সত্যিই নাভালনির মৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই খবর সঠিক কিনা তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।” মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, “আমেরিকা রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। যদি এই খবর সত্য হয় তাহলে এটি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বর্বরতার আরও একটি উদাহরণ হবে।”
এদিকে, আমেরিকার মতোই রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ফ্রান্স ও কানাডা। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “আজকের রাশিয়ায়, মুক্তমনাদের গুলাগে পাঠিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।”
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “নাভালনির মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। পুতিন যে একটা দানব তা গোটা বিশ্বকে মনে করিয়ে দিল এই ঘটনা।” দেশ ও নাভালনির পরিবারের প্রতি নৃশংস আচরণ করেছেন পুতিন। এর জন্য তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে। এই বলে রুশ প্রেসিডেন্টের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নাভালনির স্ত্রীও।
[আরও পড়ুন: ‘জাপানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আপত্তি নেই’, মন্তব্য কিমের বোনের]
কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে এই মুহূর্তে পুতিন কোথায় রয়েছেন? তাঁর কী বক্তব্য নিজের পয়লা নম্বর শত্রু নাভালনির মৃত্যু নিয়ে? রয়টার্স সূত্রে খবর, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ নাকি রুশ প্রেসিডেন্টকে এই বিষয়টি জানিয়েছেন। শুক্রবার রাশিয়ার ফেডারেল জেলের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, হাঁটতে বেরিয়েছিলেন নাভালনি। তখনই অসুস্থ বোধ করেন তিনি। খানিকক্ষণের মধ্যেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে যান। দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স টিম হাজির হয় ঘটনাস্থলে। সেই দলই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
বলে রাখা ভালো, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমালোচক হিসাবেই খ্যাত নাভালনি। ক্রেমলিনের অন্দরে চলা দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব তিনি। শুধু তাই নয়, ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলার ডাকও দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এহেন পরিস্থিতিতে জালিয়াতি ও দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগে নাভালনিকে দোষী সাব্যস্ত করে রাশিয়ার একটি আদালত। তাঁর সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে ৯ বছর করা হয়। পরে তা আরও বেড়ে একলাফে হয় ১৯ বছর।