সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মসনদে বসেই রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেন (Joe Biden)। এবার মস্কোর কাছে দুই দেশের মধ্যে থাকা পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত চুক্তি আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
[আরও পড়ুন: আমেরিকার সঙ্গে সামরিক মহড়ায় শক্তিপ্রদর্শন ভারতীয় সাবমেরিন বিধ্বংসী বিমানের]
হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, ২০২১ অর্থাৎ চলতি বছরই আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে থাকা এসটিএআরটি (Strategic Arms Reduction Treaty) চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর কাছে সর্বোচ্চ কতগুলি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে, তা নিয়েই ওই চুক্তি হয়েছিল। তাই জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির পক্ষে প্রেসিডেন্ট জো বিডেন। এই প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, “আমরা আরও পাঁচ বছরের জন্য এসটিএআরটি চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির পক্ষে। এটা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেন প্রেসিডেন্ট জো বিডেন। আমেরিকার স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই আমরা রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করছি। তবে নিজের আগ্রাসী ও প্ররোচনামূলক কার্যকলাপর জন্য মস্কোকে জবাব দিতে হবে।”
উল্লেখ্য, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে যায়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, ২০১৯ সালে রাশিয়া ও অমেরিকার মধ্যে হওয়া ‘Intermediate-Range Nuclear Forces Treaty’ বা আনবিক মিসাইল সংক্রান্ত চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে আমেরিকাকে তুলোধনা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোভিয়েত জমানার শেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল আইএনএফ চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পাল্লার সব ধরনের ক্রুজ মিসাইল নিষিদ্ধ করা হয়। যার জেরে অস্ত্রভাণ্ডার গড়ার প্রতিযোগিতায় রাশ টানা গিয়েছিল। আতঙ্ক কাটিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল দু’টি মহাযুদ্ধের দুঃস্বপ্ন ভুলতে না পারা ইউরোপের মানুষ। ওই সময় বিভিন্ন পশ্চিমি দেশের রাজধানী লক্ষ্য করে মোতায়েন ছিল রুশ আনবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। চুক্তির ফলে সেই সংকট থেকে মুক্তি মেলে। এবারও এহেন সংকট থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটতে রাজি বিডেন প্রশাসন।