সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব (Hijab Protest) না পরার শাস্তি হিসাবে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় ইরানের তরুণী মাহসা আমিনির। সেই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমগ্র ইরান (Iran)। এবার সেই বিক্ষোভের মদতদাতা হিসাবে আমেরিকাকে তোপ দাগল আয়াতোল্লা খোমেইনির প্রশাসন। ইরানের বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের মদতেই দেশজুড়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে বিক্ষোভকারীরা। অন্যদিকে, পুলিশি অত্যাচারে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭৫ জন প্রতিবাদীর। তবে এই সংখ্যা মানতে চায়নি ইরানের সরকার।
এহেন পরিস্থিতিতে বিবৃতি জারি করেছে ইরানের বিদেশমন্ত্রক। মুখপাত্র নাসির কানানি আমেরিকাকে একহাত নিয়ে বলেছেন, “ইরানের স্থিতাবস্থা নষ্ট করতে সব সময়ে মুখিয়ে থাকে আমেরিকা (USA)। আমাদের দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে ওয়াশিংটন সর্বদাই সচেষ্ট। যদিও তাদের সেই উদ্যোগ কখনওই সফল হয়নি।” তিনি আরও বলেছেন, “আমেরিকা-সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ বিক্ষোভকারীদের ইন্ধন যোগাচ্ছে। কিন্তু জনতার অধিকাংশই দেশের শাসন ব্যবস্থাকে সমর্থন করেন।” সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে কানানি বলেছেন, ইরানের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করতে যারা উঠে পড়ে লেগেছে, তাদেরকে ফল ভুগতে হবে।
[আরও পড়ুন: আবের শেষকৃত্যে যোগ দিতে জাপানে মোদি, প্রধানমন্ত্রী কিশিদার সঙ্গে সারলেন বৈঠক]
তবে ইরানে হিজাব কাণ্ডে প্রতিবাদের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুলিশি দমন পীড়ন। এমনকী, হিজাব পরিহিতা মহিলা পুলিশকেও কাজে লাগিয়ে প্রতিবাদ দমিয়ে দিতে চাইছে ইরানের প্রশাসন। বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই ৭৫জন প্রতিবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। ইরানের ৪৬টি শহরে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এই সংখ্যা মানতে নারাজ ইরানের সরকার। তাদের তরফে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত হিজাবকাণ্ডের প্রতিবাদে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই পুলিশ।
তবে ইরানের সর্বত্র ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম-সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। ফলে ইরানের প্রকৃত চিত্র কোনওভাবেই বিশ্বের সামনে প্রকাশ পাচ্ছে না। প্রশাসনের হাজার চেষ্টা সত্বেও কিছুতেই বিক্ষোভ থামছে না। বরং যত দিন যাচ্ছে, ততই বিদ্রোহের আঁচে আরও উত্তপ্ত হচ্ছে ইরান। পুরুষরাও এগিয়ে এসেছেন হিজাব বিরোধী প্রতিবাদে। হিজাব তো দূর অস্ত, বোরখা খুলে চুল পর্যন্ত কেটে ফেলছেন মহিলারা। সেই চুল দিয়েই বানানো হয়েছে ফ্ল্যাগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ছবি। তবে এসবেরও চেয়েও বেশি যে ভিডিও নজর কেড়েছে নেটিজেনদের, তা হল আরব দুনিয়ার নারী-পুরুষদের মুখে গাওয়া ‘বেলা চাও’য়ের (Bella Ciao) মতো বিদ্রোহের গান।