অভিরূপ দাস: ভাবা হয়েছিল এক। হয়েছে আরেক। দুইয়ের মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। আধাখেঁচড়া এন্টালি বিদ্যাসাগর মার্কেট তাই ধূলিসাৎ করে দেবে কলকাতা পুরসভা। এন্টালির পদ্মপুকুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বড় অংশ জুতো তৈরির ব্যবসায় জড়িত। সিআইটি রোডে রাস্তার উপরেই তাঁরা জুতো বিক্রি করেন। বাম আমলে তাঁদের পুনর্বাসনের জন্যই এন্টালি বিদ্যাসাগর মার্কেট তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল।
‘‘এটা মার্কেট?’’এন্টালির ভাঙাচোড়া বাড়ি দেখে মুচকি হাসেন এলাকার বাসিন্দারা। নামেই বাজার। পুরসভার বাজার দপ্তরের আধিকারিকরা বলছেন, আসলে এন্টালির ওই আবাসন একটা পোড়ো বাড়ি। না আছে নিকাশি, না সম্পূর্ণ হয়েছে নির্মাণ। মেয়র পারিষদ (বাজার) আমিরুদ্দিন ববি জানিয়েছেন, বাজার তো হয়ইনি, উল্টে পুরসভার গলার কাঁটা ওই মার্কেট। সম্প্রতি মেয়র পারিষদ বৈঠকে তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে ‘গ্রাউন্ড জিরো’হয়ে যাবে ওই এলাকা।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল-কংগ্রেস নৈকট্যে ক্ষুব্ধ সেলিম! জোট ভাঙার আশঙ্কা সিপিএমের]
জানা গিয়েছে, নিকাশি না থাকার কারণে জল জমে যায় বাড়িটিতে। অসম্পূর্ণ নির্মিত আবাসনে শখ করে আসতে চান না কোনও ব্যবসায়ী। যার জন্য বাম বোর্ডের দিকেই আঙুল তুলছে মেয়র পারিষদ (বাজার)। পুরসভা সূত্রে খবর, বাম আমলে প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় দ্বিতীয়বার মেয়র হওয়ার সময় উদ্বোধন হয়েছিল এই বিদ্যাসাগর মার্কেটের। সেই ভিত্তি প্রস্তরও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবে পুরসভা। আমিরুদ্দিন ববি জানিয়েছেন, কোনওরকমে উদ্বোধন করলেও সংস্কারের দিকে নজর দেয়নি তৎকালীন প্রশাসন। নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় জল জমে যায় যত্রতত্র।
বছরের শুরুতেই এন্টালি বিদ্যাসাগর মার্কেট পরিদর্শন করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মেয়র সে সময় নিজে গিয়ে দেখেন বেশ কিছু হকার জবরদখল করে রয়েছে মার্কেটের একাংশ। ঘরগুলো ব্যবসায়ীরা গুদাম-ঘর হিসাবে ব্যবহার করছেন। এদিকে দীর্ঘ সংস্কারের অভাবে এখানে সেখানে খসে পড়ছে পলেস্তারা। কিন্তু জবরদখলের জন্য সংস্কার করা যাচ্ছিল না বিদ্যাসাগর মার্কেট। আলোচনা করে বহু দখলদারকে সরানো হয়েছে। মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন ববি জানান, সম্প্রতি পুরসভার মেয়র পারিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দ্রুত বিদ্যাসাগর মার্কেট ভেঙে ফেলা হবে। এখানে ২৩ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁদের অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর আচমকা ‘হানা’! নিরাপত্তা আরও বাড়ছে নবান্নের]
কী হবে এই মার্কেট এলাকায়? পুরসভা সূত্রে খবর, আগামিদিনে আধুনিক পার্কিং-সহ নতুন করে বিদ্যাসাগর মার্কেট গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভার। সূত্রের খবর, এমনভাবে তা গড়ে তোলা হবে, কর্মাশিয়াল অফিসের পাশাপাশি পুরসভার কিছু অফিসও থাকবে বিদ্যাসাগর মার্কেটে। মেয়র আমিরুদ্দিন ববির কথায়, নতুন করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে ওই জায়গায়। নতুন বিল্ডিংয়ে কী কী থাকবে তার সিদ্ধান্ত নেবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।