দীপঙ্কর মণ্ডল: সরকারি স্কুলশিক্ষক পাত্র বাতিল করে মেয়ের বাবারা না কি বেসরকারি চাকুরে পাত্র খুঁজছেন! এমন মিমে ভাসল সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media)। ইন্টারনেটে শেয়ার হওয়া মজার গ্রাফিক্স, পোস্টার বা ভিডিও মিম নামে পরিচিত। রাজনীতি, সিনেমা, বিনোদন বা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের নিয়ে হামেশাই মিম ছড়ায়। কখনও তা পৌঁছে যায় ব্যক্তি আক্রমণে। কিন্তু সরকারি চাকরি বাতিল করে বেসরকারি চাকুরের হাতে মেয়েকে তুলে দেওয়া নিয়ে মিম আগে দেখা যায়নি।
ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে এমন একাধিক মিম। শেয়ার হওয়া একটি মিম বলছে, ‘১৪ বছর ধরে ইস্কুলের শিক্ষক ছেলেটির কচি কোমল হৃদয় নিয়ে ছিনিমিনি খেলার পর মেয়েটি হঠাৎ একদিন বলে বসল– জাস্টিস গাঙ্গুলি রিটায়ার না করা অবধি বাবা আমাদের সম্পর্কটা মেনে নেবে না। বাড়ি থেকে বেসরকারি চাকুরিজীবী ছেলে খুঁজছে, ভাল থেকো।’ মিমের স্রষ্টা যে আদ্যোপান্ত রসিকতা করে এটি লিখেছেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
[আরও পড়ুন: পার্থ-পরেশ-অনুব্রতর সম্পত্তি কত? খতিয়ান চেয়ে আয়কর দপ্তরকে চিঠি পাঠাল সিবিআই]
নিরাপত্তা, পেনশন, ছুটি, বিভিন্ন ভাতা প্রভৃতির জন্য সরকারি চাকরি এখনও বেশি গুরুত্ব পায় সমাজে। বিশেষ করে কোনও পাত্র যদি শিক্ষকতার মতো সরকারি পান তাঁর চাহিদা থাকে তুঙ্গে। বেসরকারি ক্ষেত্রে যত গ্ল্যামারই থাকুক, শ্বশুরবাড়ির প্রথম পছন্দ সরকারি চাকুরে জামাই। নয়া মিমের বিষয়বস্তু অনুযায়ী, সরকারি শিক্ষকতার (Teachers) তুলনায় অস্থায়ী, কম বেতন, কম ছুটি, নানারকমের সুবিধাহীন বেসরকারি চাকুরেদেরই নাকি এখন খুঁজে বেড়াচ্ছেন মেয়ের বাবারা। বেসরকারি স্কুলে যাঁরা শিক্ষকতা করেন তাঁদেরও তুলনায় কম নিরাপত্তা। চলে যেতে পারে চাকরিও। তবু নাকি সরকারি স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক মানছে না পাত্রীপক্ষ। কেন এমন উলটপুরাণের মিম?
গোটা দেশ জেনে গিয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC Scam) শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। রায় না হলেও শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বেশ কড়া নির্দেশ দিচ্ছেন। তাঁর নির্দেশে মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। দফায় দফায় চলছে জেরা। এফআইআর হয়েছে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্তার বিরুদ্ধে। মেধা তালিকা না মেনে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের বরখাস্ত করা হচ্ছে। মিমে এই বিষয়টিকে থিম করা হয়েছে। ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে প্রেমিককে বিদায় জানাচ্ছেন প্রেমিকা। মিমে দেখা যাচ্ছে, “৪১ মাস খেলা করার পর মেয়েটি তার শিক্ষক প্রেমিককে বলল –শোনো, বিচারপতি গাঙ্গুলি অবসর না নেওয়া পর্যন্ত বাবা আমাদের সম্পর্কটা মেনে নেবে না। ব্রেকআপ।”
[আরও পড়ুন: তাইওয়ান দখলের ছক চিনের! অডিওয় ফাঁস লালফৌজের ভয়াবহ ষড়যন্ত্র]
বাবা-মায়েরা অনেক খোঁজখবর নিয়ে মেয়েকে পাত্রস্থ করেন। প্রেমের সম্পর্কেও মেয়েরা দেখে নিরাপত্তা। প্রেমিকের ভবিষ্যৎ টলোমলো হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন প্রেমিকা। মজার ছলে সেই বিষয়টিকে উপস্থাপন করেছেন মিম নির্মাতা। একটি-দু’টি বাক্যে সহজ রসিকতার মাধ্যমে বাস্তবকে তুলে ধরা হয়েছে।