সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামলা পালটা হামলা, হানাহানি, মৃত্যুমিছিল সব কিছুই জারি রয়েছে। আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও বদলায়নি রাশিয়া-ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ছবি। বরং যতদিন যাচ্ছে দুদেশের মধ্যে সংঘাতের ঝাঁজ আরও বাড়ছে। গত আগস্ট মাসে কামানের গর্জনের মাঝেই শান্তির বার্তা নিয়ে ইউক্রেনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দিল্লিতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। এবার সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েই চলতি বছরের শেষে প্রথমবার ভারতে আসতে পারেন জেলেনস্কি! তাঁর সফর নিয়ে কী জানালেন ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার পোলিশচুক?
২০১৯ সালের ৬ মে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথগ্রহণ করেন জেলেনস্কি। কিন্তু এই ৫ বছরে একবারও ভারত সফর করেননি তিনি। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, সোমবার পোলিশচুক জানিয়েছেন, "প্রধানমন্ত্রী মোদি আমাদের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা খুব খুশি। আমি প্রেসিডেন্টের এদেশে আসা নিয়ে খুবই আশাবাদী। এই বছরের শেষে তিনি হয়তো দিল্লিতে আসতে পারেন। দুদেশের সম্পর্ককে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে এটা খুব বড় পদক্ষেপ হবে। শুধু তাই নয়, দুই রাষ্ট্রনেতা বিশ্ব শান্তির জন্য নানা আলোচনাও করতে পারবেন।" যদি সব ঠিক থাকে তাহলে এটাই জেলেনস্কির প্রথম ঐতিহাসিক ভারত সফর হবে। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পোলিশচুকও। তাঁর কথায়, "আমি নিশ্চিত যে, ভারতে আশার জন্য প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও খুব আগ্রহী। এর আগে তিনি কখনও এখানে আসেননি।" প্রসঙ্গত ১৯৯২ সাল থেকে ভারত-ইউক্রেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সূচনা হয়।
[আরও পড়ুন: আরও মজবুত সম্পর্ক, মোদি-সাক্ষাতে বন্ধুত্ব কায়েম রাখার বার্তা আবু ধাবির যুবরাজের]
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিশেষ সামরিক অভিযান ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাঁধভাঙা জলের জেলেনস্কির দেশে ঢুকে পড়ে রুশ ফৌজ। তার পর থেকে জারি রয়েছে লড়াই। দীর্ঘসময় ধরে যুদ্ধ করার ফলে গত কয়েকমাস ধরে রণক্ষেত্রে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল কিয়েভকে। কিন্তু এখন তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মাটি কামড়ে রণক্ষেত্রে লড়াই করছে ইউক্রেনীয় সেনা। রাশিয়াকে একচুল জমি ছাড়তে নারাজ তারা। বেশ কিছুদিন ধরে রাশিয়ার কার্স্ক অঞ্চলে ভয়ানক অভিযান চালাচ্ছে কিয়েভ। পালটা মার দিচ্ছে মস্কোও। যেভাবে পুতিন বাহিনী ইউক্রেনে ঢুকে অভিযান শুরু করেছিল এবার সেভাবেই কার্স্কে ঢুকে আক্রমণ শানাচ্ছে ইউক্রেনীয় ফৌজ।
উল্লেখ্য, রাশিয়া সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আলিঙ্গন করা নিয়ে মোদিকে তোপ দেগেছিলেন জেলেনস্কি। কিন্তু এখন মোদি-ম্যাজিকে মুগ্ধ তিনি। অতীতের তিক্ততা ভুলে যুদ্ধ বন্ধে তাঁর ভরসা মোদিই। বিশ্লেষকদের মতে, মোদির পরামর্শে যদি আলোচনায় বসে ইউক্রেন ও রাশিয়া তাহলে তা বিরাট কুটনৈতিক জয় হবে। কারণ পুতিনের সঙ্গে মোদির সখ্যের কথা কারও অজানা নয়। এদিকে, তিক্ততা ভুলে জেলেনস্কির কাছে এখন মোদিই ‘শান্তির দূত’। ফলে ভারসাম্যের খেলা খেলে যদি দিল্লি এই যুদ্ধের বন্ধের পথ খুলে দিতে পারে তাহলে তা বিভিন্ন দেশের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা হবে।