রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: জোটে ফের বিপত্তি! জোটসঙ্গী সিপিএমকে (CPM) ‘স্বৈরাচারী’ বলে বসলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। তাঁর এহেন মন্তব্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীও বঙ্গের জোটসঙ্গীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন কেরলে। একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের নবীন ক্লাবে সভা ছিল সংযুক্ত মোর্চার। সভামঞ্চে হাজির ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। সেই মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠে রাজ্যের তৃণমূল সরকার ও কেন্দ্রীর বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগছিলেন অধীর। বাংলায় বিরোধীশক্তির কণ্ঠরোধের চেষ্টা নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। সেই সময় অধীরবাবু বলে বসেন, “স্বৈরাচারী সিপিএম”। তবে দ্রুত নিজের ভুল শুধরে নেন তিনি। বললেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি, স্বৈরাচারী তৃণমূলকে খতম করব।”
[আরও পড়ুন: জমি বিবাদের জের, মুর্শিদাবাদে প্রতিবেশীর গুলি-বোমায় প্রাণ গেল ২ জনের]
যদিও কংগ্রেসের সাফাই, মুখ ফসকে এমন মন্তব্য করেছিলেন অধীর। এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা কংগ্রেস সভাপতি মণিকুমার ডার্নাল বলেন, “এমন কথা বলেছেন বলে আমি শুনিনি। তবে বলে থাকলে সেটা নেহাতই মুখ ফসকে হয়েছে। সেই কথার গুরুত্ব কেন দেওয়া হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না।” এ প্রসঙ্গে জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সম্পাদক সিপিএম নেতা কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যেটা উনি বলতে চাননি সেটা সংবাদমাধ্যমে বলা মানে একজনের বক্তব্য বিকৃত করা। দ্রুত বক্তব্য দেওয়ার কারণে একটি শব্দ ভুলবশত বেরিয়ে গিয়েছে। তার পর সেটা সংশোধনও করে নিয়েছেন। অথচ তার বক্তব্যকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
বাংলায় বাম-কংগ্রেসের ‘দোস্তি’ হলেও কেরলে দুই দলের ‘কুস্তি’। একে অপরকে তুলোধোনা করছে সেখানে। দিন কয়েক আগেই বামেদের সঙ্গে বিজেপির যোগ নিয়ে সরব হয়েছিলেন খোদ রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস নেতা বলেন, “যেখানেই মোদি যান, সেখানেই তিনি বলেন, কংগ্রেস-মুক্ত ভারত চাই। সকালে ঘুম থেকে উঠে বলেন কংগ্রেস- মুক্ত ভারত। রাতে ঘুমনোর আগে বলেন, কংগ্রেস-মুক্ত ভারত, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কখনও বলেন না, সিপিএম-মুক্ত ভারত। কারণ, সিপিএমকে নিয়ে ওঁর কোনও আপত্তি নেই। কারণ উনি জানেন, ওঁদের মতোই বামেরাও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি। ওঁরা সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করেন। ওঁরা হিংসা এবং ক্রোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। কংগ্রেস কখনও ক্রোধ বা ঘৃণা ছড়ায় না। কংগ্রেস শুধু ঐক্যবদ্ধ করে।” রাহুলের অভিযোগ, বামপন্থীরা বছরের পর বছর ধরে কংগ্রেস নেতাকর্মীদের খুন করে আসছে। কিন্তু কংগ্রেস কখনও কাউকে মেরে ফেলে না। কেরলে বামেদের বিরুদ্ধে তীব্র বিষোদগারের পর এবার বাংলাতেও বামেদের স্বৈরাচারী বলে বসলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সংযুক্ত মোর্চা জোটের এই অবস্থা দেখে মুখ টিপে হাসছেন বাম-কংগ্রেস বিরোধী গোষ্ঠীও।
[আরও পড়ুন: ‘দিদি, ও দিদি’র পালটা দিলেন অনুব্রত, তৃণমূল নেতার কটাক্ষ, ‘নরেন, ও নরেন’]
দেখুন ভিডিও: