সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের নির্বাচনের ভরকেন্দ্র নন্দীগ্রাম। তবে সোমবারের একটি মৃ্ত্যু সেই ছবিটা কিছুটা বদলে দিল। নতুন করে চর্চায় উঠে এল উত্তর ২৪ পরগনার নিমতা। রবিবার গভীর রাতে মৃত্যু হয়েছে বিজেপি কর্মীর মা ‘প্রহৃত’ শোভা মজুমদারের। এই ঘটনায় একদিকে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অন্যদিকে নন্দীগ্রামের ঠাকুরচকের সভা থেকে শাহকে পালটা তোপ দাগলেন মমতা (TMC Leader Mamata Banerjee)। বললেন, “নিমতায় মহিলার মৃত্যুর পর প্রশ্ন করছেন, বাংলার কী অবস্থা? আপনাদের উত্তরপ্রদেশ, দিল্লির কী অবস্থা? আপনি হাথরাসের সময় কোথায় ছিলেন? তখন কি চোখে ফেট্টি বেঁধেছিলেন?”
উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি উত্তর দমদম পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের নিমতা (Nimta Case) পাটনা স্কুল রোডের বাসিন্দা শোভা মজুমদারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত বৃদ্ধার ছেলে বিজেপি কর্মী গোপাল মজুমদারের অভিযোগ, তিনজন তৃণমূল কর্মী তাঁদের বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। তাঁকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারধর করছিল। সেই সময়ই গোপালবাবুর মা অভিযুক্তদের বাধা দিতে এলে অশীতিপর বৃদ্ধা মাকেও বেধড়ক মারধর করে শাসকদলের ওই কর্মীরা। আক্রান্ত বৃদ্ধার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এ নিয়ে ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবে শোভাদেবীর মৃত্যুর পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। নিমতা থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা।
[আরও পড়ুন : ‘একদিন না ঘরকা, না ঘাটকা অবস্থা হবে’, শুভেন্দুকে তীব্র কটাক্ষ মমতার]
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটারে লেখেন, “বাংলার মেয়ে শোভা মজুমদারের মৃত্যুতে শোকার্ত। তৃণমূলের গুন্ডাদের মারে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই পরিবারের দুঃখ, ব্যথা মমতা দিদিকে দীর্ঘদিন ভাবাবে।” টুইট করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, বাংলার অন্যতম পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য-সহ একাধিক নেতা-নেত্রী। সকলেরই আক্রমণের নিশানায় রাজ্যের তৃণমূল সরকার। অভিযোগ, মমতার আমলে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। এই আক্রমণের জবাব দিলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী।
ঠাকুরচকের সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতার জবাব, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। নিমতায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এর পরই অমিত শাহ টুইট করে লিখলেন, বাংলার কী অবস্থা? আমি জিজ্ঞেস করব উত্তরপ্রদেশ-দিল্লি-হাথরাসের কী অবস্থা? তখন কি উনি চোখে ফেট্টি বেঁধে থাকেন?” এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দিনহাটায় বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর কথাও টেনে আনেন। বলেন, “দিনহাটায় ওদের এক কর্মী আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তে প্রমাণও মিলেছে। এদিকে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে। এই ক’দিনে আমাদের দলের যে তিনজন কর্মী মারা গেল, তার বেলা কী হবে?” সবমিলিয়ে নিমতায় বিজেপি কর্মীর মায়ের মৃত্যু ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।