ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: উপনির্বাচনে জয়ী দুই বিধায়কের শপথ বাক্যপাঠ জটিলতায় নতুন মোড়। শপথ জটিলতার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে আবেদন জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি যেন রাজ্যপালকে নির্দেশ দেন, যাতে তিনি স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারকে শপথের দায়িত্ব দেন। চিঠিতে রয়েছে, রাজ্য়পাল চাইলে নিজে বিধানসভায় এসে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন। এই পর্বে অনুঘটকের ভূমিকায় জগদীপ ধনকড়। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল, আবার বর্তমানে উপরাষ্ট্রপতি। তাঁর মাধ্যমেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যোগাযোগ পর্ব চলছে রাজ্য বিধানসভার।
বুধবার দুই জয়ী বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠের জন্য রাজভবনে যেতে বলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose)। তবে বিধানসভায় শপথ নেবেন বলে জানান সায়ন্তিকা (Sayantika Banerjee) বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকার। রাজ্যপাল বিধানসভায় না আসায় বুধের পর বৃহস্পতিবারও ধরনায় বসেন তাঁরা। শুক্রবারও ধরনায় বসবেন সায়ন্তিকা ও রেয়াত। বুধবারই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই জটিলতা না কাটলে প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখবেন। সেই কথা মতোই রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার। সেখানে সেতুবন্ধনের কাজ করছেন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাপস সাহা-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রীকে তলব, বৃহস্পতিবারই হাজিরার চিঠি সিবিআইয়ের]
শপথ জটিলতার মাঝে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়েছে। বুধবার শপথ গ্রহণের টালবাহানার পর শুভেন্দু বলেন, "রাজ্যপাল তাঁকে শপথ পড়ানোর দায়িত্ব দিলে সেই কাজ করতে পারেন।" শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিমানবাবু বলেন, "বিরোধী দলনেতার এই ধরনের বক্তব্য সামনে আসায় আমাদের সন্দেহ যে, এখানে দলগত কোনও বিষয় আছে। বিজেপির কাউকে দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর প্রক্রিয়ার দিকে বিষয়টি এগোচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেই কারণেই কি বিষয়টা নিয়ে রাজ্যপাল এমন গড়িমসি করছেন? তাঁর কী উদ্দেশ্য বোঝা যাচ্ছে না।"
উল্লেখ্য, শপথ জট নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকেও উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালকে নিশানা করে তিনি বলেন, “জেতার পর একমাস ধরে বসে রয়েছেন আমার বিধায়করা। শপথ নিতে দিচ্ছেন না। মানুষ ওঁদের নির্বাচিত করেছেন। শপথ নিতে না দেওয়ার কী অধিকার রয়েছে ওঁর? স্পিকারকে দায়িত্ব দেবেন রাজ্যপাল, অথবা ডেপুটি স্পিকারকে দেবেন, তা না হলে নিজে বিধানসভায় আসবেন! রাজভবনে কেন যাবেন সবাই? রাজভবনের যা কীর্তি, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছেন। আমার কাছে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।" মাসখানেক আগে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মচারী। সেই নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। সেই প্রসঙ্গ তুলে আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী।