সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যজুড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘বহিরাগত’ তত্ত্বকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল। নির্বাচনী আবহে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘বহিরাগত’ বলে দাগিয়ে দিতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সেই অস্ত্রকেই পালটা হাতিয়ার করার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর দ্বৈরথকে ‘ভূমিপুত্র’ বনাম ‘বহিরাগত’র তকমা দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার কর্মিসভায় দাঁড়িয়ে সেই ‘বহিরাগত’ তকমার বিরুদ্ধেই হুঙ্কার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলে দিলেন, তিনি বহিরাগত হলে তো মুখ্যমন্ত্রী হওয়াই উচিত ছিল না!
এদিন নন্দীগ্রামের বটতলা হেলিপ্যাডের মাঠে কর্মিসভা থেকে বিজেপিকে একহাত নেন মমতা। বুঝিয়ে দেন, তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ হাতিয়ারকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। কারণ তিনি প্রত্যক্ষভাবে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অতীত স্মৃতি তুলে ধরে কৃষি আন্দোলন রক্ষায় নিজের ভূমিকার কথাও নন্দীগ্রামবাসীকে মনে করিয়ে দেন তিনি। কীভাবে দিনের পর দিন এখানকার সাধারণ মানুষের অধিকারের জন্য লড়েছিলেন, সে কথাই ঘুরেফিরে উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে। এরপরই তোপ দাগেন বহিরাগত ইস্যু নিয়ে। প্রশ্ন তোলেন, এত আন্দোলনের পর তিনি ‘বহিরাগত’ হলেন কীভাবে? এক জেলার মানুষ কি অন্য জেলায় এলে বহিরাগত হয়ে যায়?
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের যোগ্যরাই স্থান পাচ্ছেন বিজেপিতে! ‘বেনোজল’ প্রসঙ্গে মন্তব্য দিলীপের]
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে পা রাখার আগেই এদিন সেখানে ‘বহিরাগত’ ব্যানার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এদিন সেই প্রসঙ্গে মঞ্চে দাঁড়িয়ে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে মমতার জবাব, “কেউ কেউ আমায় বাইরের লোক বলছেন। বাংলার লোক বাইরের লোক হয়ে গেলাম? আমিও বহিরাগত? তাহলে তো মুখ্যমন্ত্রী হওয়াই উচিত ছিল না। বহিরাগত তো ওরাই। বাইরে থেকে ঘুরতে আসে।” তারপরই আবেগঘন গলায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “আপনারা মনে করলে তবেই এখানে দাঁড়াব। যদি আমায় ঘরের মেয়ে বলে মনে করেন তাহলেই লড়ব। বলুন চাই তো আমায়?”
নন্দীগ্রামে ৬৭ হাজার ভোটের জন্য লড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিজেপির হাতে ২ লক্ষ ১০ হাজার ভোট। এভাবেই বারবার তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুভেন্দু বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, হাসতে হাসতে নন্দীগ্রামে জিতবে গেরুয়া শিবির। এবার তারই পালটা দিয়ে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী মমতার হুঙ্কার, “মানুষে মানুষে ভাগাভাগি নয়। ৭০-৩০ নয়। আমরাই ১০০।”