রাহুল রায়, বসিরহাট: রিভার রিসার্চ (River Research) বা নদী গবেষণার মাধ্যমে সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবার জাপানি প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারে রাজ্যের বনদপ্তর। রোপন করা হতে পারে মালয়েশিয়ান ভাটি ঘাস। শনিবার সুন্দরবনের (Sunderban)কংক্রিটের সেতু ও দুর্বল নদীবাঁধ পরিদর্শনের পর এমনই ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যের নতুন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পার্থ ভৌমিক আরও জানিয়েছেন, চলতি মাসের ৩০ তারিখ তিনি হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ-সহ প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার নদীবাঁধ পরিদর্শন করতে পুনরায় আসবেন।
বসিরহাটের (Basirhat)সুন্দরবন লাগোয়া ব্লক সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, হাড়োয়া ও মিনাখাঁয় যেসব নদী রয়েছে, তার বাঁধের দৈর্ঘ্য ৭৫০ কিলোমিটার। তার মধ্যে মাত্র ৩০ কিলোমিটার কংক্রিটের বাঁধ। বাকি বাঁধের কাজ চলছে। বর্ষা আসতেই দুর্ভোগের শিকার হন সুন্দরবনবাসী। ইতিমধ্যে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মোট ২৬৫০টি কংক্রিটের সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি দুর্বল নদীবাঁধ ও সেতুগুলির সংস্কারের কথা জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ছিল গগনচুম্বী অট্টালিকা, হল ধুলোর স্তূপ, নিমেষে ধ্বংস নয়ডার টুইন টাওয়ার, দেখুন ভিডিও]
তাঁর সেই নির্দেশ মেনে কাজ দ্রুত করার জন্য শনিবার সুন্দরবনের কংক্রিটের সেতু ও দুর্বল নদীবাঁধ পরিদর্শনে গেলেন স্বয়ং রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick), বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotopriyo Mullick), উত্তর ২৪ পরগণার জেলা শাসক শরদ কুমার ত্রিবেদী, জেলা সেচ আধিকারিক রানা চট্টোপাধ্যায়-সহ প্রশাসনিক কর্তারা। সন্দেশখালির ছোট কলাগাছি নদীবাঁধ, বিদ্যাধরী, রায়মঙ্গল, কালিন্দী, গৌড়েশ্বর হাতা খালি নদীর উপর দুর্বল সেতু-সহ বিভিন্ন নদীর ঘাটে যে দুর্বল জেটিঘাটগুলি পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি একটা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করেন দ্রুত এসব বাস্তবায়িত করতে। সন্দেশখালির ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বেড়মজুর, কানমারি, ধামাখালি, কালিনগর ও ন্যাজাট শহর একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায় নদীবাঁধ পরিদর্শন করেন।
[আরও পড়ুন: ট্রেনে হেনস্তা খোদ সিদ্ধিদাতার! বৈধ টিকিট থাকা সত্ত্বেও নামিয়ে দেওয়া হল গণেশ মূর্তি]
বিশেষ করে যে সমস্ত এলাকায় বাঁধ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, সেখানে নেমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অভাব অভিযোগগুলি শোনেন। তারপর সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক জানান, ইতিমধ্যে বাঁধ গুলি মেরামতির কাজ পুরোদমে শুরু করার জন্য রিভার রিসার্চ টিম তৈরি করা হয়েছে। যারা মূলত সুন্দরবনের নদীর পার্শ্ববর্তী বাঁধগুলি পর্যবেক্ষণ করেন। রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বক্তব্য, বাঁধকে রক্ষা করতে ইতিমধ্যে ১৫ কোটি ৩০ লক্ষ ম্যানগ্রোভ অর্থাৎ গরান, গেঁওয়া ও কেওড়ার মত গাছগুলি পূর্ব মেদিনীপুর দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও বসিরহাটের নদীমাতৃক এলাকায় বসানো হয়েছে। পাশাপাশি ম্যানগ্রোভকে (Mangrove)রক্ষা করত জাপানি প্রযুক্তিতে মালয়েশিয়ার বাটি ঘাস রোপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।