সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার বেলা বাড়তেই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল পরিষ্কার। রাজস্থান, ছত্তিশগড়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তেলেঙ্গানা, মিজোরামে ধুয়ে মুছে সাফ বিজেপি। সেই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের আগে সেমিফাইনালে বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে গেল হাত শিবির। রাজধানী দিল্লির সদর কার্যালয়-সহ দেশজুড়ে সর্বত্র কংগ্রেস কর্মীদের উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো। উৎসবের মেজাজ হিন্দিবলয়ে। সেই জায়গায় পিছিয়ে থাকতে চায় না বাংলাও। মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর ঘোষণা, আগামিকাল ধর্মতলার দলীয় সমাবেশে বিজয় উৎসব করবে প্রদেশ নেতৃত্ব। তবে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, নেতা-কর্মীদের মনোবল ফেরাতে এই বিজয় সমাবেশ টনিকের কাজ করবে। লোকসভার আগে গোটা দেশের মতো এ রাজ্যেও অক্সিজেন পেল প্রদেশ কংগ্রেস, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশর।
[লোকসভায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট নয়, একসুর প্রদেশ কংগ্রেসে]
এদিন বিধান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র। ছিলেন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। সোমেন মিত্র বলেন, এই ফলাফল শুধু ওই রাজ্যগুলিই নয়, গোটা দেশের কংগ্রেস কর্মীদের জয়। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস দেখিয়ে দিয়েছে, বিজেপিকে ধাক্কা দেওয়া যায়। বিজেপিকে ২০১৯-এ কেন্দ্র থেকে উৎখাত করতে এই জয় বাড়তি মনোবল জোগাবে। গোটা দেশে যেমন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা উৎসব করছেন, এ রাজ্যেও উৎসব হবে। বুধবার পূর্বঘোষিত দলীয় সভায় বিজয় সমাবেশ হবে। সোমেনবাবুর সুরেই প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, যাঁরা মনে করেছিলেন কংগ্রেস শেষ হয়ে গিয়েছে এই ফলাফল তাঁদের জবাব দিল। এ রাজ্যেও কংগ্রেস লোকসভায় ভাল ফল করবে আশাবাদী তাঁরা। প্রসঙ্গত, দলভাঙনের রাজনীতির জাঁতাকলে পড়ে বাংলায় অস্তিত্ব সংকটে শতাব্দী প্রাচীন দলের। যে হারে নির্বাচিত বিধায়ক, নেতা-কর্মীরা দল ছাড়ছেন তাতে বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের তকমা ধরে রাখাও এখন মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেসের পক্ষে। সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সঙ্গে লোকসভায় জোটে যেতে নারাজ প্রদেশ নেতৃত্ব। এই বিষয়ে দলে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছেন প্রদেশ নেতারা। তা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীকেও জানিয়েছেন সোমেন মিত্র। কিন্তু গতমাসে তিনি বলেন, এআইসিসি যা সিদ্ধান্ত নেবে তা তাঁরা মেনে নেবেন। কিন্তু সবার আগে এই বির্পযয় থেকে নিজেদের মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে। একক ক্ষমতায় রাজনীতির ময়দানে লড়তে হবে। আত্মসম্ভ্রম বজায় রেখে দল ভোটে লড়বে। যে শাসকদল নেতাদের ভাঙিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে জোটে যাওয়ার অনিচ্ছা হাইকমান্ডকে জানিয়েছেন সোমেনরা।
[গণতন্ত্রে মানুষই ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’, বিজেপির ভরাডুবিতে টুইট মমতার]
তবে, এদিন দিল্লিতে দাঁড়িয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজস্থান, ছত্তিশগড়-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছিল বাংলার শাসকদল। সেই রাজ্যগুলিতে ভোটে না লড়লেও শতাব্দী প্রাচীন দলের প্রতি সমর্থন ছিল তৃণমূলের। তবে কংগ্রেসকে পুরো কৃতিত্ব দিতে নারাজ মমতা। তাঁর মতে, জনগণই ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’। এ রাজ্যে শাসকদল-প্রদেশ কংগ্রেস সংঘাত স্পষ্ট। কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী জোট এককাট্টা হলেও বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট কতটা সম্ভবপর তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক মহল।
The post রাজস্থান-ছত্তিশগড়ের জয়োচ্ছ্বাস প্রদেশ ভবনেও, বুধবার রাজ্যে বিজয় সমাবেশ appeared first on Sangbad Pratidin.