সুব্রত বিশ্বাস: যথেষ্ট ফোর্স নেই বলেই স্টেশনের তাণ্ডব আটকানো সম্ভব হয়নি। শনিবার দিনভর দক্ষিণ-পূ্র্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে ভাঙচুর-অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এমনই মন্তব্য রেলের। যদিও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ইতিমধ্যেই টাটানগর ও ঝাড়সুগুদা থেকে দু কোম্পানি বাহিনী আনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে রেলের তরফে। যদিও তা আদৌ কতটা কার্যকরী, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, শনিবারের পর রবিবারও রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে ভাঙচুর চালাচ্ছে নাগরিকত্ব আইন বিরোধীরা। আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্টেশনে-স্টেশনে।
শনিবার দিনভর ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হন চেঙ্গাইল, সাঁকরাইল, বাউড়িয়া, ফুলেশ্বর নলপুর-সহ একাধিক স্টেশনের যাত্রীরা। চোখের সামনে দেখতে পান, রে রে করে তেড়ে আসছে একদল। কারও হাতে লোহার রড, কারও পাথর, কারও হাতে বাঁশ। বুঝে ওঠার আগেই রোষ আছড়ে পড়ে বুকিং কাউন্টারে। কাউন্টারে ভাঙচুরের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল রুমের সামগ্রী ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। কর্মী থেকে যাত্রী আতঙ্কে দৌড়তে থাকে সকলে। ট্রেন লক্ষ্য করে করা হয় পাথরবৃষ্টি। ভাঙচুর থেকে অগ্নিসংযোগের জেরে পুরোপুরি অচল করে দেওয়া হল রেলকে। কিন্তু এই ভয়ংকর পরিস্থিতিতেও দেখা মেলেনি আরপিএফ, জিআরপি এমনটাই অভিযোগ করেন যাত্রীরা। প্রশাসন ও রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এ প্রসঙ্গে রেলের তরফে জানানো হয়, সারাদিন উন্মত্ত জনতাকে সামলানোর মতো আরপিএফ বাহিনী না থাকায় বেগতিক হয়ে পড়ে পরিস্থিতি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আইজি এস কে পারি বলেন, অভিযুক্তদের টার্গেট স্পষ্ট না হওয়ায় নির্ধারিত স্টেশনগুলি চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। ফলে প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি তিনি বলেন, যে হারে জনতা জমায়েত হয়ে হামলা চালাচ্ছে তা প্রতিহত করার মতো আরপিএফ দক্ষিণ-পূর্ব রেলে নেই।
[আরও পড়ুন: দুমকা যাওয়ার পথে অন্ডালে প্রধানমন্ত্রী, রাজ্য নিয়ে রিপোর্ট দিলেন বিজেপি নেতারা]
প্রসঙ্গত, শনিবার বেলার দিকে লাঠি, পাথর নিয়ে চেঙ্গাইল স্টেশনে জমা হয় অসংখ্য মানুষ। হামসফর এক্সপ্রেসের জানলা-দরজার কাচ লোহার রড দিয়ে ভাঙা হয়। বিভিন্ন স্টেশনের প্যানেলরুমে ভাঙচুর করার পাশাপাশি কংক্রিটের সিট ভেঙে লাইনে ফেলা হয়। স্লিপারের সঙ্গে লাইনের সংযোগকারী প্যান্ড্রল ক্লিপ উপড়ে ফেলা হয়। উপড়ে ফেলা হয় সিগন্যাল। চার জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় দক্ষিণ-পূর্ব রেল। পূর্ব রেলের বসিরহাট, লালগোলা, রামপুরহাট, মালদহের বিভিন্ন শাখায় অবরোধকারীদের তাণ্ডব চলে সমানতালে। রবিবারও সমানতালে চলছে অশান্তি। আকড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুরের পর আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীররা। তিলডাঙ্গা-সহ একাধিক স্টেশন ও রাজ্য সড়কের ছবি কার্যত একই।
The post পর্যাপ্ত ফোর্সের অভাবেই স্টেশন আতঙ্কপুরী, লাগাতার আক্রমণে সাফাই রেলের appeared first on Sangbad Pratidin.