সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের উৎস সন্ধানে চিনের ইউহান প্রদশে তদন্ত চালাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) বিশেষজ্ঞ দল। গত বৃহস্পতিবার তদন্তকারী দলটি চিনে পৌঁছেছে। কিন্তু তদন্ত হলেও প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন কে, তা হয়তো কোনও দিন জানা যাবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন: ‘করোনার শেষের শুরু’, দেশজুড়ে টিকাকরণ প্রক্রিয়ার সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি]
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা মহামারী বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভন কারকোভ বলেন, “প্রথম কোন ব্যক্তির শরীরে হানা দিয়েছিল করোনা ভাইরাস তা হয়তো কোনও দিন জানা সম্ভব হবে না।” বিশ্লেষকদের মতে, তদন্ত চলাকালীন WHO-এর এহেন মন্তব্য চিনকে সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে দিল। কারণ, ইউহান করোনার উৎস নয়। বরাবর এমনটাই দাবি করে এসেছে বেজিং। এবার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টকেই হাতিয়ার করবে জিনপিং প্রশাসন। প্রসঙ্গত, গোড়া থেকেই করোনা নিয়ে তথ্য গোপন করার অভিযোগ রয়েছে চিনের বিরুদ্ধে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে শি জিনপিং প্রশাসনের দাবিও মিথ্যা। পরিস্থিতি যে সত্যিই উদ্বেগজনক তা প্রমাণ করে দেশটির উত্তরের শহর শিজিয়াজুয়াংয়ে শতাধিক মানুষ সংক্রমিত হওয়ায় ১ কোটি ১০ লক্ষের বেশি মানুষকে লকডাউনের আওতায় নিয়ে এসেছে কমিউনিস্ট দেশটি। এমনও তত্ত্ব উঠে এসেছে যে, এটা নাকি রাসায়নিক অস্ত্র। যদিও সেই তত্ত্বকে সরাসরি খারিজ করে চিন। কিন্তু তার পরেও বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ থেকেই গিয়েছিল।
আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ করোনা মহামারীর জন্য চিনকে দায়ী করে আসছে। আর সেই অভিযোগ যে মিথ্যা নয়, তা প্রমাণ হয়েছে একাধিক গোপন নথি ফাঁস হওয়ায়। কয়েকদিন আগে চিনে করোনা মহামারী নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে CNN। সেখানে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের রিপোর্টের ভিত্তিতে দাবি করা হয় যে, প্রথমদিকে করোনা সংক্রমণের কথা গোপন রেখেছিল হুবেই প্রশাসন। স্থানীয় চিকিৎসকদের মতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত হুবেইয়ে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৯১৮। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যানে এর অর্ধেক দেখানো হয়েছিল। ফলে, কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। বলে রাখা ভাল, ২০১৯ সালের নভেম্বরে চিনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী ইউহান শহরে প্রথম করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। এহেন পরিস্থিতিতে গোড়াতে WHO-এর তদন্তকারী দলকে দেশে ঢুকতে না দিলেও অবশেষে সম্মতি প্রদান করে চিন। এই ডোলের শীর্ষে রয়েছেন পশু-পাখির রোগ বিশেষজ্ঞ পিটার বেন এমবারেক। গত জুলাই মাসেও চিনে গিয়ে অনুসন্ধান করে এসেছেন তিনি।