সন্দীপ্তা ভঞ্জ: রহস্য-রোমাঞ্চ, থ্রিলার-গোয়েন্দা ওয়েব সিরিজের ভিড়ে ভিন্ন স্বাদ মিলল রাহুল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দাদুর কীর্তি’তে। সদ্য মুক্তি পেয়েছে হইচই-তে। এ যেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘চর্বিত-চর্বনে’র মাঝে স্বাদবদল। মজার গল্প। একাধিক প্লট। কী নেই তাতে? একই গল্পে ভূত-ভবিষ্যৎ, গুপ্তধন, গা-ছমছম, প্রেম-রোম্যান্স আর পারিবারিক আবেগ-অনুভূতি…। ‘দাদুর কীর্তি’র একই অঙ্গে বহুরূপ। সামাজিক বার্তার মোড়কে ভরপুর বাঙালিয়ানার সিরিজ।
ভূতুড়ে চৌধুরী বাড়ি। পরিবারের সদস্যরা একলা বাড়ি ফেলে যে যার মতো শহুরে জীবনে ব্যস্ত। বৃদ্ধা মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় নেই বললেই চলে! সুযোগ বুঝে প্রোমোটারদের চোখ রাঙানির শিকারও হতে হয় সেই প্রাসাদোপম চৌধুরী বাড়িকে। যদিও হানাবাড়ি তকমা সেঁটে রেহাই মেলে। এসবের মাঝেই সন্তানদের বাড়িমুখো করতে মা-বাবা এক ফন্দি এঁটে ফেলে। তারপরই ট্যুইস্ট!
[আরও পড়ুন: বায়োপিকের আড়ালে গেরুয়া রাজনীতির প্রোপাগান্ডা! কেমন হল রণদীপের প্রথম পরিচালিত ছবি ‘সাভারকর’?]
গতে বাঁধা থ্রিলার কিংবা ভুতূড়ে সিরিজের থেকে ভালো। চিত্রনাট্য টানটান। একাধিক প্লটকে বেশ দক্ষতার সঙ্গে একসুতোয় বাঁধা হয়েছে। একবারে ভিন্ন স্বাদের হরর কমেডি। দেখতে দেখতে অনেকটা ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ ছবির কথা মনে পড়ল। ৬ পর্বের সিরিজ। অন্তিম এপিসোড বাদে প্রতিটার দৈর্ঘ্যই প্রায় মিনিট কুড়ির আশেপাশে। দেখতে গিয়ে কোথাও হোঁচট খেতে হয় না। পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের গল্প বলার ধরণ বেশ সাবলীল লাগল। একেকটা পর্বের শেষে কৌতূহল জিইয়ে থাকে। পরের পর্বে যাওয়ার জন্য। তবে বেশ কিছু দৃশ্যের বাঁধন আরেকটু টাইট হলে ভালো হত। যেমন চৌধুরী পরিবারের প্ল্যানচ্যাটের দৃশ্য কিংবা পলাশের গুপ্তঘর আবিষ্কারের দৃশ্য।
কাস্টিং এই সিরিজের অন্যতম স্তম্ভ। পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনসূয়া মজুমদার, সত্যম ভট্টাচার্য, কাঞ্চন মল্লিক, চান্দ্রেয়ী ঘোষ, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়-এর মতো একঝাঁক দক্ষ অভিনেতা রয়েছেন ‘দাদুর কীর্তি’তে। দাদুর ভূমিকায় পরাণ অনবদ্য। এই সিরিজে আলাদা করে তাঁর বা অনসূয়ার অভিনয় নিয়ে আলাদা করে কিছুই বলার নেই। নজর কাড়লেন কাঞ্চন মল্লিকও। একরাশ খোলা হাওয়ার মতো সতেজ সৃজলা গুহর চরিত্র। গল্পের অন্যতম চরিত্র খরাজ মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠ। সব সারপ্রাইজ এই পরিসরে না ভাঙাই ভালো। বরং সিরিজটা দেখুন সপ্তাহান্তে।
সিরিজ- দাদুর কীর্তি
চিত্রনাট্য- ৩.৫
অভিনয়- ৪
পরিচালনা- ৩.৫
সব মিলিয়ে- ৪