সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট এলেই ক্ষোভ বাড়ে। বাংলা হোক বা ঝাড়খণ্ড ব্যতিক্রম নয় কোনও রাজ্যই। সেই ধারা অব্যাহত রেখে ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শুরু হল দল বদলের হিড়িক। ভোটের মুখে হাত শিবিরের সঙ্গে ২৭ বছরের সম্পর্কে দাঁড়ি টেনে বিজেপিতে ভিড়লেন কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি মানস সিনহা। মূলত টিকিট না পেয়েই তাঁর এই দলত্যাগ বলে জানা যাচ্ছে।
কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন মানস। রাজ্য বিজেপির সদর দপ্ততে তাঁর হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দিয়ে মানসকে দলে অভ্যর্থনা জানান, ঝাড়খণ্ড বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র। এই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ডে বিজেপির নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বিজেপিতে যোগ দিয়ে মানস বলেন, "গত ২৭ বছর ধরে কংগ্রেসের জন্য আমি রক্ত-ঘাম ঝরিয়েছি। এত বছরে আমার মধ্যে এই বিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে কংগ্রেস দলের কর্মীদের সম্মান করে না। তাই আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বিজেপিতে নিঃশর্ত ভাবে বিজেপিতে যোগ দিলাম।" এই যোগদান মঞ্চেই হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, 'আমিও ২২ বছর ধরে কংগ্রেসে ছিলাম। আমি জানি বাস্তবে কংগ্রেস দলটার কী অবস্থা। রাজ্যে বিজেপির জয় নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করব আমরা।'
এদিকে কংগ্রেস সূত্রে খবর, আসন্ন নির্বাচনে গড়বা জেলার ভবনাথপুর কেন্দ্রে টিকিট চেয়েছিলেন মানস। তবে ইন্ডিয়া জোটের জেরে এই আসন জেএমএমকে দিয়েছে কংগ্রেস। তবে এই আসন কংগ্রেসের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। টানা ৭বার কংগ্রেস নিজেদের দখলে রেখেছে ভবনাথপুর কেন্দ্র। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রের ৩ বারের বিধায়ক ভানুপ্রতাপ শাহী ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। এবার বিজেপির টিকিটে লড়ছেন তিনি। অন্যদিকে জেএমএম প্রার্থী করেছে অনন্ত প্রতাপকে ইনিও প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক। এই আসনে প্রার্থী হতে চেয়ে মানস কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানালেও তা গ্রাহ্য হয়নি। যার জেরেই এই দলত্যাগ।
নিজের ইস্তফাপত্রে ওই কংগ্রেস নেতা লেখেন, 'আমি ২৭টা বছর কংগ্রেসকে দিয়েছি। দল আমাকে যে কাজ দিয়েছে পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করেছি। তবে দলের প্রতি আমার ভালোবাসা ও নিষ্ঠাকে দল কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না। চতুর্থবার দল আমায় অপমান করেছে। অনেক সহ্য করার পর এবার আমার সহ্যশক্তি শেষ হয়েছে। এতদিন আমি কংগ্রেস দলকে নিয়েই ভেবে এসেছি, তবে এবার আমি নিজের কথা ভাবলাম। তাই দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিলাম।'