shono
Advertisement

বাংলার রাজনীতি থেকে ‘ভ্যানিশ’বামেরা, গড় হারালেন অধীরও

আব্বাস সিদ্দিকির হাত ধরাই কাল হল? কেন এই হাল বাম-কংগ্রেসের?
Posted: 06:53 PM May 02, 2021Updated: 07:11 PM May 02, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোদি বনাম দিদি। দুই বড় খেলোয়াড়ের লড়াইয়ে রাজ্য থেকে কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল তৃতীয় শক্তি বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট। রাজ্যে মেরুকরণের নির্বাচনে শূন্য হাতে ফিরতে হল বামেদের। নিজের গড় মুর্শিদাবাদেই খালি হাতে ফিরতে হল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। বঙ্গ রাজনীতিতে প্রথমবার পা রেখে খাতা খুললেও, একেবারেই প্রভাব ফেলতে পারলেন না ‘ভাইজান’ আব্বাস সিদ্দিকি।

Advertisement

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেই বাংলায় বাম-কংগ্রেসের দৈনদশা প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। বামেরা ৭ শতাংশ এবং কংগ্রেস সাড়ে ৫ শতাংশে নেমে এসেছিল। একুশে নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে একে অপরের হাত ধরে ভোট বৈতরণী পার করার চেষ্টা করছিল মরিয়া দুই দল। সঙ্গে দোসর হিসেবে জুটেছিলেন ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের নেতা আব্বাস সিদ্দিকি। কিন্তু ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল এই তিন দলের সমাহার, বাংলার মানুষকে একেবারেই প্রভাবিত করতে পারেনি। উলটে যেটুকু জমি বাম এবং কংগ্রেসের ছিল, সেটাও হারাতে হল।

[আরও পড়ুন: এলেন, দেখলেন, জয় করলেন… রাজ্যে তৃণমূলের সাফল্যে ‘সিকন্দর’ সেই প্রশান্ত কিশোর]

এবারের নির্বাচনের লড়াইটা অবশ্য অন্যভাবে শুরু করেছিল বামেরা। সুজন, কান্তি, অশোক, সেলিম, তন্ময়দের মতো পুরনো এবং পরীক্ষিত মুখের পাশাপাশি দীপ্সিতা, ঐশী, মীনাক্ষী, সৃজন, সায়নদীপ, শতরূপ, সপ্তর্ষিদের মতো একঝাঁক তরুণ মুখকেও সুযোগ দিয়েছিল বামেরা। প্রচারেও ছিল অভিনবত্বের ছাপ। প্রাচীন ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বা ফ্ল্যাশ মবের মাধ্যমে আধুনিকতা আনার চেষ্টা করেছিল বামেদের তরুণ ব্রিগেড। কংগ্রেস আবার অধীর ক্যারিশমায় ভর করে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহে ভাল ফলের আশায় ছিল। কিছু কিছু কেন্দ্রে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় ভর করে জয়ের আশায় ছিল হাত শিবির। কিন্তু কোনওকিছুই কাজে আসেনি। বামেদের নবীন-প্রবীণ দুই শিবিরই চূড়ান্ত ব্যর্থ। খাতা খোলা তো দূরের কথা রাজ্যের অধিকাংশ আসনেই জামানত বাঁচাতে পারেনি বামেরা। নিজেদের ‘গড়’ হিসেবে পরিচিত মুর্শিদাবাদেও কংগ্রেস চূড়ান্ত ব্যর্থ। অধিকাংশ আসনেই তাঁরা তৃতীয়। একা কুম্ভ হিসেবে খাতা খুলেছেন আইএসএফের নওসাদ সিদ্দিকি।

ভোটের হারের অবস্থা আরও শোচনীয়। এই প্রতিবেদন লেখা হওয়া পর্যন্ত বামেদের ভোটের হার ছিল সাকুল্যে ৫ শতাংশের কিছু বেশি। সিপিএমের একার ভোট সাড়ে চার শতাংশ। কংগ্রেসের অবস্থা আরও হতাশাজনক। তাঁদের ভোটের হার ২.৮৭ শতাংশ। প্রশ্ন হল, ভোটের আগে যে সংযুক্ত মোর্চা সরকার গঠন করার লক্ষ্যে লড়াই করার বার্তা দিচ্ছিল, তাঁদের এই বেহাল দশা কেন?

[আরও পড়ুন: ‘দিদি ও দলীয় কর্মীদের শক্তির কাছে মুখ পুড়ল মোদি-শাহদের’, টুইটে খোঁচা ডেরেকের]

রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যে মূলত মেরুকরণের ভোট হওয়ায়, তৃতীয় বিকল্পের কথা মানুষ ভাবেননি। রাজ্যে মেরুকরণের ফলে সব ভোট বাম এবং তৃণমূলের মধ্যে ভাগ হয়েছে। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে, বিজেপিকে আটকাতে বাম এবং কংগ্রেসের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ ভোটাররা সেরা বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন তৃণমূলকেই। আব্বাস সিদ্দিকির হাত ধরার ফলে একটা সাম্প্রদায়িক তকমা বামেদের নামের পাশেও লেগে গিয়েছিল। সেটাই সম্ভবত তথাকথিত সেকুলারদের তৃণমূলের দিকে ঠেলে দিল। বাম এবং কংগ্রেসের জোটকে ২০১৬ সালেই প্রত্যাখ্যান করেছিল মানুষ। তার উপরে ভাইজানকে জোটে টানায় বাম-কংগ্রেসের আরও কিছুটা ক্ষতি হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার