সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের আসন ভবানীপুর ছেড়ে কেন নন্দীগ্রামে গিয়ে প্রার্থী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বিজেপি এতদিন দাবি করছিল, মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েই ‘সেফ সিটে’র খোঁজে ভবানীপুর থেকে সোজা নন্দীগ্রামে ‘হাই জাম্প’ মেরেছেন। গেরুয়া শিবির রীতিমতো প্রচারও শুরু করে দিয়েছিল, ভবানীপুর নিজের জন্য নিরাপদ নয় জেনেই ‘আন্দোলনের পীঠস্থান’ নন্দীগ্রামে প্রার্থী হচ্ছেন মমতা (Mamata Banerjee)। তবে, এতদিন নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়া নিয়ে মমতাকে সেভাবে মুখ খুলতে শোনা যায়নি। মঙ্গলবার প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার নন্দীগ্রামে পা রেখেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূলনেত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিলেন, সেফ সিটের খোঁজে নয়, মানুষের ভালবাসার টানেই নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের বটতলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে কর্মিসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “আমার তো ঘরের কেন্দ্র ছিল ভবানীপুর। আমাকে তো কিছুই করতে হত না। আমি তো ওখানেই থাকি। কিন্তু, আমি যেদিন শেষ এসেছিলাম, তখন নন্দীগ্রাম আসনটা খালি ছিল। তখন কিন্তু এখানে কোনও বিধায়ক ছিল না। তাই আমি তখন দেখতে চেয়েছিলাম এখানকার মানুষ আমাকে চায় কিনা। তেখালির সভা থেকে আপনাদের উদ্দেশে প্রশ্ন করেছিলাম, আমি যদি এখানে প্রার্থী হই কেমন হয়? সেদিন মানুষের ভালবাসা আমাকে টেনে এনেছে। আপনাদের সেই ভালবাসা, সেই সাহস, সেই উদ্দীপনা, মা বোনেদের উৎসাহ আমাকে এখানে প্রার্থী হতে উৎসাহ দিয়েছে। আমার দু’চোখে শুধু নন্দীগ্রাম (Nandigram)।” মমতাকে এদিন আরও একবার পুরনো ছন্দে বলতে শোনা যায়,”ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলব নাকো নন্দীগ্রাম।”
[আরও পড়ুন: ‘ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলব নাকো নন্দীগ্রাম’, কর্মিসভা থেকে বার্তা মমতার]
নিজের প্রার্থী হওয়ার রহস্য ফাঁস করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন,”গ্রামের দিকে আমার একটা টান বরাবরই আছে। আমার এবার মাথায় ছিল, আমি হয় সিঙ্গুর (Singur), নাহয় নন্দীগ্রামে দাঁড়াব। কারণ এই দুটো হল আন্দোলনের পীঠস্থান।” মঙ্গলবার আরও একবার তৃণমূল কর্মীদের কাছে প্রার্থী হওয়ার জন্য অনুমতি চেয়ে নেন মমতা। বলেন, “যদি আপনারা মনে করেন আমার দাঁড়ানো উচিত নয়, তাহলে কাল আমি মনোনয়ন দেব না। যদি আপনারা মনে করেন, আমি আপনাদের ঘরের মেয়ে, তাহলেই আমি মনোনয়ন দেব। আপনারা বলুন কাল মনোনয়ন দেব তো?” প্রত্যাশিতভাবেই দর্শকাসন থেকে বিপুল সাড়া পেয়েছেন মমতা। জনতাকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেছেন, কি এখান থেকে দাঁড়াব তো? আপনারা ভোট দেবেন তো? দুই ক্ষেত্রেই সমবেত জনতা ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দিয়েছে।