রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: টলিপাড়ায় গেরুয়া রাজনীতিতে জট আরও বাড়ল। টলিউডে বিজেপি প্রভাবিত দুই সংগঠন কাজ শুরু করেছে। এক সপ্তাহ আগেই স্টুডিওপাড়ায় শিল্পী ও কলাকুশলীদের নিয়ে সংগঠন গড়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল গেরুয়া শিবির প্রভাবিত বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ। পরিষদ আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের অনুমোদিত। যে সংগঠনের সভাপতি রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি, সাধারণ সম্পাদক সদ্য বিজেপিতে আসা শঙ্কুদেব পন্ডা। এরপর গত শুক্রবার স্বয়ং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে, সেই টলিউডেই মাথা তুলেছে গেরুয়া শিবিরের আরেকটি সংগঠন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচারস অ্যান্ড কালচারাল কনফেডারেশন। কনফেডারশেনর মঞ্চে দেখা গিয়েছিল সাংসদ জর্জ বেকার, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ছাড়াও ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল, অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়, সংঘমিত্রা চৌধুরির মতো বিজেপির পরিচিত মুখকে।
[আরও পড়ুন- টলিপাড়ার সমস্যা মেটাতে গিয়ে দ্বন্দ্ব বাড়ল বিজেপিতে, হাল ধরছে সংঘ!]
সোমবার দ্বিতীয়বার সাংবাদিক সম্মেলন করে বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ। আর এদিন চলচ্চিত্র পরিষদের মঞ্চে হাজির করানো হয়েছিল বৈদ্য দে-কে। বৈদ্য দে-র দাবি, কনফেডারেশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র দেখিয়ে দাবি করলেন কনফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনিই। চলচ্চিত্র পরিষদের তরফে শঙ্কুদেব পন্ডা জানান, ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচারস অ্যান্ড কালচারাল কনফেডারেশন সংগঠনটি তাদের সঙ্গে যোগ দিল। যার সভাপতি বৈদ্যনাথ দে। অথচ গত শুক্রবার এই কনফেডারেশনের পথ চলা শুরু হয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে। আর এটা নিয়েই টলিপাড়ায় গেরুয়া শিবিরের দুই সংগঠনের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়ে উঠল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
নব গঠিত ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচারস অ্যান্ড কালচারাল কনফেডারেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সংঘমিত্রা চৌধুরি অবশ্য অস্বীকার করেছেন বৈদ্য দে-র দাবি। তিনি জানিয়েছেন, ২৯ জুন সংগঠনের কিছু সংশোধনী প্রস্তাব নেওয়া হয়। বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই বৈদ্য দে-র বদলে অগ্নিমিত্রা পালকে কনফেডারেশনের নতুন সভাপতি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন- অগ্নিমিত্রার নেতৃত্বে টলিপাড়ার বিজেপি ঘনিষ্ঠ সংগঠনের বৈঠক]
একদিকে, আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস অনুমোদিত বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদকে মানতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। অন্যদিকে, কনফেডারেশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির থেকে স্বয়ং দিলীপ ঘোষ ও বিজেপি নেতৃত্ব তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। সেই কনফেডারেশনের বৈধতা নিয়ে আবার পরিষদের মঞ্চে প্রশ্ন তুলে দেওয়া হল। সব মিলিয়ে টলিপাড়ায় গেরুয়া শিবির প্রভাবিত দুই সংগঠনের মধ্যে দ্বন্দ্বই প্রকাশ্যে এসে পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কুদেব পন্ডা এসব বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। আবার বিজেপির কালচারাল সেলের আহ্বায়ক অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ নামে কোনও সংগঠনের কথা তাঁদের জানা নেই।
এরপরই প্রশ্ন উঠছে, টলিপাড়ায় নিজেদের ভিত শক্ত করার আগেই যেভাবে গেরুয়া শিবিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। তাতে আসল উদ্দেশ্য কি আদৌও পূরণ হবে? না সমস্যা মিটবে ইন্ডাস্ট্রির!
The post ফের প্রকাশ্যে টলিউডের ইউনিয়ন নিয়ে গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব appeared first on Sangbad Pratidin.