সংবাদ প্রতিদিনি ডিজিটাল ডেস্ক: সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে ফের সরব তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bannerjee)। বুধবার বাঁকুড়ার জনসভা থেকে বামেদের লোভী, বিজেপিকে ভোগী বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। একইসঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের ত্যাগী হওয়ার পরামর্শও দিলেন দলনেত্রী। সভার শুরুতেই তুলে আনলেন বাঁকুড়ায় বামেদের অত্যাচারের পুরনো খতিয়ান।
এদিনের জনসভা থেকে বাঁকুড়া, জঙ্গল মহলে বামেদের অত্যাচার নিয়ে সরব হন তৃণমূল নেত্রী। জনসভায় উপস্থিত দর্শকদের মমতার প্রশ্ন, “বাঁকুড়ার মানুষ কি সেই সব অত্যাচারের দিন ভুলে গিয়েছেন?” সিপিএমের সেই হার্মাদরাই আর রঙ বদলে বিজেপির কর্মীতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। সিপিএম নেতারা সারদা-নারদা মামলা থেকে বাঁচতে বিজেপির পায়ে পড়ে গিয়েছে বলেও কটাক্ষ করলেন তৃণমূল নেত্রী। এদিনের জনসভা থেকে তাঁর চ্যালেঞ্জ, “ক্ষমতা থাকলে আমাকে জেলে ভরুন। সেখান থেকেও তৃণমূলকে বাংলায় ক্ষমতায় আনব।” এ প্রসঙ্গে তিনি বিহারের লালুপ্রসাদ যাদবের উদাহরণও টেনে আনেন। বিহারে ম্যানেপুলেশন করে বিজেপি জিতেছে বলে অভিযোগ করেলেন তিনি।
[আরও পড়ুন : ‘শাড়ি পরা হিটলারি শাসন বরদাস্ত করা হবে না’, নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে বেনজির কটাক্ষ সায়ন্তনের]
এদিনের জনসভা থেকে নাম না করেই কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন মমতা। তাঁর কথায়, “সারা বছর রাজ্যের মানুষকে দেখে না। নির্বাচনের আগে এলাকার মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দিচ্ছে কেউ কেউ।” আবার পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের হাত দিয়ে টাকা পাঠানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কৃষিবিল, ১০০ দিনের কাজ-সহ একাধিক ইস্যুতেও সরব হয়েছেন তিনি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, “১০০ দিনের কর্মীরা সঠিক সময় টাকা পাচ্ছেন না। কারণ সেই টাকা সুদে খাটাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।” তাঁর কথায়, “কেন্দ্র বাংলা থেকে করের টাকা নিয়ে যায়। সেই টাকাই আবার রাজ্যকে দেয়। আলাদা করে কিছুই দেয় না।”
জনসভা থেকে নাম না করে দিলীপ ঘোষকেও কটাক্ষ করতে পিছপা হননি মমতা। তাঁর খোঁচা, “কেউ কেউ বলছেন গোমূত্র খেলে করোনা হবে না। তিনি তো খেয়েছিলেন. তাহলে তাঁর কীভাবে করোনা হল?” বিজেপির রাজ্য সভাপতির গোমূত্র থেকে সোনা তৈরির মন্তব্য নিয়েও কটাক্ষ করলেন তিনি। বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বাঁকুড়া সফর নিয়ে মমতার খোঁচা, “বাঁকুড়ায় এসে পাঁচতারা হোটেলের খাবার খেয়েছেন তিনি। এভাবে কি মানুষের কাছে আসা যায়?”
[আরও পড়ুন : সিউড়িতে দিলীপ ঘোষের সভায় যেতে বাধা, গুলিবিদ্ধ ২ বিজেপি কর্মী]
শুনুকপাহাড়ীর জনসভা থেকে নাম না করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কেও বিঁধলেন তিনি। তাঁর কথায়, কিছু মানুষের কোনও কাজ নেই সকাল থেকে শুধু টুইট করে যান। উল্লেখ্য,বাংলা কৃষকদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা না দেওয়ার নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধেছিলেন রাজ্যপাল। পালটা মমতার দাবি, “আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, কৃষকদের প্রকল্পের টাকা চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, রাজ্যকে টাকা পাঠিয়ে দিন, আমরা কৃষকদের দিয়ে দেব। কিন্তু তাঁরা টাকা পাঠায়নি।”