সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতির ময়দানে ব্যক্তিগত সমীকরণও পালটে যায়। এক সময়ে যাঁরা ছিলেন কাছের বন্ধু, তাঁদের সঙ্গেই দূরত্ব বেড়ে যায়। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের ফেসবুক লাইভে এমন আভাসই পাওয়া গিয়েছিল বিধাননগরের তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate) তথা রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী সুজিত বসু (Sujit Bose) কথায়। নিজের দুই পুরনো বন্ধু মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) ও বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo) প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি।
টালিগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। আবার প্রার্থী না হলেও বিজেপির হয়ে ক্রমাগত প্রচার করে চলেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। নিজের কথায় দুই তারকাকেই বিঁধেছিলেন সুজিত বসু। বিশেষ করে বাবুল সুপ্রিয়কে। সংবাদ প্রতিদিনকে পাঠানো ভিডিও বার্তাতেই তাঁর জবাব দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। পুরনো বন্ধুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি।
সংবাদ প্রতিদিন ফেসবুক লাইভে সুজিত বসু বলেছিলেন, বাবুল যখন বাবুল সুপ্রিয় হননি, তখন থেকেই তাঁর পাড়ায় গান গাইতেন। আশা ভোঁসলের সঙ্গে তাঁর খুব ভাল সম্পর্ক। জানিয়েছিলেন, আশাজি তাঁর বাড়িতে সাতবার এসেছেন। সুদেশ ভোঁসলের সঙ্গে তিনি গাইতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয়র সেই সময় বিশেষ কাজ ছিল না। তাই বাবুল সুপ্রিয় নাকি তাঁকে বলেছিলেন, “আমি কেন গাইব না?” সেই প্রেক্ষিতে সুজিত বসু আশা ভোঁসলকে বলেছিলেন, বাবুল তাঁর ক্লাবের ছেলে তাই তাঁর সঙ্গেই গাইতে হবে।
সুজিত বসুর এই মন্তব্যেরই পালটা দেন বাবুল সুপ্রিয়। প্রশ্ন করেন, আশা ভোঁসলের কাছে কে নিয়ে গিয়েছিল? বম্বেতে নিয়ে গিয়ে কে আলাপ করিয়েছিল? আশাজির সঙ্গে ২০০-রও বেশি শো করেছেন বলে জানান বাবুল। তাঁর বাড়িতেও যাতায়াত আছে। এমনকী সুজিত বসুর বাড়িতে তাঁর মায়ের সঙ্গেও আশা ভোঁসলের আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানান বাবুল। এরপরই আবার দাবি করেন, সুজিত বসুর বেশিরভাগ শো জানুয়ারি মাসে হত। খুব কম টাকা নিয়েই তিনি শো করতেন। এমনকী শান, শ্রেয়া, সুখবিন্দরের মতো তারকারা তাঁর বন্ধু বলে কম পারিশ্রমিকে শো করে দিতেন।
[আরও পড়ুন: ভয়াবহ কলকাতার করোনা পরিস্থিতি, টিকাদানে জোর, পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে মিলবে ভ্যাকসিন]
বাবুল সুপ্রিয়র মা ও বাবাকেও চিনতেন বলে জানান সুজিত বসু। সংবাদ প্রতিদিন ফেসবুক লাইভে জানিয়েছিলেন, বিমান বন্দরে যখন তাঁর সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র দেখা হয়েছিল, বিজেপি প্রার্থী অনুযোগ জানিয়েছিলেন সুজিত বসুর মায়ের মৃত্যুর খবর তাঁকে জানানো হয়নি কেন। এরপরই তিনি বলেছিলেন, “তুই যখন জেনেছিস। জানার পর তোর তো উচিত ছিল খবর নেওয়া!” এই প্রসঙ্গে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাবুল বলেন, “বড় মিথ্যে বলেছেন। যেটা না বললেই পারতেন।” জানান, সুজিত বসুর মায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। আবার তাঁর মায়ের সঙ্গেও সুজিত বসুর ভাল সম্পর্ক ছিল। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ফোনও করেছিলেন। কিন্তু সুজিত বসু ধরেননি। বিমানবন্দরে যখন দু’জনের দেখা হয়েছিল কেবল শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে না ডাকার কথা বলেছিলেন। এরপরই বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “মায়ের মৃত্যু নিয়েও মিথ্য কথা বলা কিন্তু ঠিক নয়।”
নিজের ওই সাক্ষাৎকারে সুজিত বসু জানিয়েছিলেন, মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গেও তাঁর অনেক পুরনো সম্পর্ক। মহাগুরুর বাবার মৃত্যুর পরও খোঁজ নিয়েছিলেন। ‘মিঠুনদা’ প্রথমে বামপন্থী, তারপর তৃণমূল থেকে আবার চরম ডানপন্থী বিজেপিতে কীভাবে গেলেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না বলেই জানিয়েছিলেন সুজিত বসু। এতেই ক্ষিপ্ত বাবুল বলেন, “মিঠুন চক্রবর্তীর সম্পর্কে কথা বলবেন উনি!” জানান, একসময় সুজিত বসুকে মিঠুন চক্রবর্তীর ব্যাগ বইতে দেখেছেন। ইতিহাস ভুলে মিথ্যে কথা বলা তৃণমূল নেতাদের চারিত্রিক দোষ বলেও পালটা আক্রমণ করেন তিনি।
দেখুন ভিডিও –