সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের (China) শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর (Uighurs) মুসলমানদের উপরে অকথ্য অত্যাচারের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের বিষয় হয়ে রয়েছে। উইঘুরদের উপর চিনের রাষ্ট্রশক্তির নিপীড়নের অভিযোগে বারবার সামনে এসেছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিকটি। এবার সেই অভিযোগে বেজিংয়ের উপরে কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা জারি করল আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পালটা নিষেধাজ্ঞার পথে হেঁটেছে শি জিনপিং প্রশাসনও।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক, আইনসভার সদস্য, বিভিন্ন সংস্থা ও পরিবারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সঙ্গেই চিনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যেও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে বেজিং। দীর্ঘদিন ধরেই চিনের উত্তর-পশ্চিমে ১০ লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক করা ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। যদিও চিন সেই অভিযোগ মানেনি। বেজিংয়ের দাবি, তাদের দেশে যথেষ্ট ধর্মীয় স্বাধীনতা ও শ্রম আইন রয়েছে। ফলে উইঘুর মুসলিমরা সমস্ত নাগরিক অধিকার নিয়ে ভাল রয়েছেন। কিন্তু যতই তারা অভিযোগ উড়িয়ে দিক বাইডেন প্রশাসন বিভিন্ন মিত্র দেশকে নিয়ে যৌথভাবে চিনের এই আগ্রাসনে মোকাবিলা করতে চায়। মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেনের কথায়, ”সারা বিশ্বের নিন্দা সত্ত্বেও চিন শিনজিয়াং প্রদেশে গণহত্যা ও মানবতা-বিরোধী আচরণ করেই চলেছে।”
[আরও পড়ুন: রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ শেষ ৪ ভারতীয় নভোশ্চরের, জোরকদমে ‘মিশন গগনযান’-এর প্রস্তুতি]
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে শিনজিয়াং প্রদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা হওয়ার পর থেকেই উইঘুর মুসলিমদের উপর রাশ টেনেছে চিন। সেখানে উইঘুর ও অন্য মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর জুলুমের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কয়েক সপ্তাহ আগে বিবিসির তরফে এক রিপোর্টে দাবি করা হয়, বন্দিশিবিরে থাকা মুসলিম মহিলাদের উপর পরিকল্পনা করে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে চিন।
এর আগেও শোনা গিয়েছিল, মুসলিম মহিলাদের জোর করে অপারেশন করে বন্ধ্যা করে দেওয়া হচ্ছে কিংবা গর্ভপাত করানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমালোচিত হলেও তা নিয়ে বিশেষ হেলদোল নেই প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামেনেস্টি কিংবা ইসলামিক দেশগুলির সংগঠন সবাই এই বিষয়ে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও লাভ হয়নি কোনও। বরং যে কোনও মূল্যে উইঘুর সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য সবরকম চেষ্টাই চালানো হচ্ছে।