সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাঝরাতে রাজভবনের জোড়া পত্রবোমা। মুখবন্ধ খামে একটি চিঠি পৌঁছে গিয়েছে নবান্নে, অন্যটি দিল্লিতে। কিন্তু সেখানে কী আছে, তা নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। তবে কি রাজ্য়ের নামে নালিশ করে দিল্লিতে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose)? নবান্নে কি শিক্ষামন্ত্রীর নামে নালিশ করলেন? প্রশ্ন হাজার, কিন্তু উত্তর অজানা।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে তুঙ্গে উঠেছে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরোধ। সেই জের টেনেই শনিবার দুপুরে রাজ্যপাল হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, “মধ্যরাত পর্যন্ত দেখতে থাকুন কী করতে চলেছি।” তখন থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। কী পদক্ষেপ করতে চলেছেন সিভি আনন্দ বোস! পালটা কটাক্ষ শানিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীও। টুইটারে লিখেছিলেন, “সাবধান, সাবধান, সাবধান! শহরে নতুন রক্তচোষা (ভ্যাম্পায়ার) এসেছেন। নাগরিকরা নিজেদের খেয়াল রাখুন। হিন্দু পুরাণ মতে ‘রাক্ষস প্রহরে’র অপেক্ষায় থাকলাম।” কী পদক্ষেপ করেন রাজ্য়পাল, তা নিয়ে জল্পনার শেষ ছিল না। কিন্তু শেষপর্যন্ত দেখা গেল, রাত ১১টা ৪২ মিনিটে মুখবন্ধ খামে দু’টি গোপন চিঠিতে স্বাক্ষর করলেন সিভি আনন্দ বোস। একটি পাঠালেন দিল্লিতে, অপরটি নবান্নে। চিঠির বিষয়বস্তু কী, তা নিয়েই রবিবার সকাল থেকে চায়ের দোকানে ঝড় উঠেছে।
[আরও পড়ুন: মধ্যরাতে রাজ্যপালের গোপন চিঠি মুখ্যমন্ত্রী ও দিল্লিকে! কী লেখা আছে? ছড়াচ্ছে রহস্য]
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, দিল্লিতে লেখা চিঠিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কিংবা নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে নালিশ করেছেন সিভি আনন্দ বোস। কিংবা রাজ্যের নয়া শিক্ষানীতি নিয়েও বিশেষ নোট পাঠাতে পারেন দিল্লিতে। আবার উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যে বেনজির বাকযুদ্ধে জড়িয়েছে রাজ্য ও রাজভবন, তা নিয়েও দিল্লিতে বিশেষ নোট পাঠাতে পারেন রাজ্য়পাল, মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। নবান্নকে পাঠানো চিঠি নিয়েও জল্পনা রয়েছে। তবে কি সেই চিঠিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আনন্দ বোস। নাকি আরও কঠোর কোনও বার্তা রয়েছে চিঠিতে। চিঠির খাম না খোলা পর্যন্ত এই জল্পনা চলতেই থাকবে।
রাজ্য়পালের এই পদক্ষেপ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিও তোলপাড়। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, সংবিধান মেনে কাজ করছেন কি না রাজ্য়পাল, সেটাই দেখার। উনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। ওঁর পদক্ষেপে দুর্নীতিবাজরা ভয় পাচ্ছে। তাই এসব বলছেন। পালটা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তাঁর খোঁচা, “রাজ্যপাল কেন্দ্রকে তুষ্ট করার চেষ্টা করছে। ধনকড়কে দেখে উনি শিখেছেন। যাতে উপরাষ্ট্রপতি পদ পাওয়া যায়। তাই কাউকে মানছেন না।”