সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেনজির কৌশল এবং দৃঢ় প্রত্যয়ে বাইরের শত্রুর মোকাবিলা করেছেন তিনি। দেশের অখণ্ডতা বজায় রাখতে একর পর এক জঙ্গিদমন অভিযানে হয়ে উঠেছিলেন সন্ত্রাসবাদীদের ত্রাস। কিন্তু যোদ্ধার ওই কঠিন বর্মের আড়ালে ছিল একটি কোমল মন। করোনা কালে প্রতিমাসে নিজের বেতন থেকে একটা বড় অংশ দান করে সেই নরম ও দরদী মনের পরিচয় দিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত ভারতের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত (Bipin Rawat)।
[আরও পড়ুন: সেনা আধিকারিক থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, রাওয়াতের আগে আকাশপথে দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে যাঁদের]
২০২০ সালের শুরুতে বিশ্বজুড়ে শুরু হয় করোনা মহামারী। ওই আণুবীক্ষণিক জীবের দাপটে শ্মশানে জমে ওঠে মৃতদেহের পাহাড়। লকডাউনের জেরে জোর ধাক্কা খায় অর্থনীতি। টান পড়ে অনেকেরই রোজিরুটিতে। এহেন সময়ে করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে তৈরি ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলে একবছরের জন্য প্রতিমাসে নিজের মাইনে থেকে ৫০ হাজার টাকা করে দান করার কথা ঘোষণা করেন রাওয়াত। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১-এর মার্চ পর্যন্ত মোট ৬ লক্ষ টাকা দান করেন তিনি। তাঁর এই উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই করোনা তহবিলে অর্থ দান করেন। সবমিলিয়ে, সাহসী যোদ্ধার পাশাপাশি একজন দরদী মানুষ হিসেবে স্মৃতিতে বেঁচে থাকবেন রাওয়াত।
গোটা দেশকে হতবাক করে গতকাল অর্থাৎ বুধবার কপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জেনারেল রাওয়াত। বুধবার তামিলনাড়ুর পাহাড় ঘেরা নীলগিরির জঙ্গলেই ভেঙে পড়ে তাঁর হেলিকপ্টার। এই ঘটনায় বিস্মিত করেছে গোটা দেশকে। প্রশ্ন উঠছে এটি নিছকই দুর্ঘটনা না কি এর পিছনে নাশকতাও থাকতে পারে। ভিভিআইপি কপ্টারের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন জেনারেল রাওয়াতের স্ত্রী মধুলিকাও। সেনা ও বায়ুসেনার আধিকারিক মিলিয়ে আরও ১২ জন এই ঘটনায় মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছেন সিডিএসের পাঁচ নিরাপত্তারক্ষী। একজন ডিএ এবং এক এসও। ঘটনায় আহত একমাত্র গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংকে কার্যত আধপোড়া অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় সেনা।