সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অল্পের জন্য প্রাণরক্ষা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুসের! ইয়েমেনে এক কর্মসূচিতে গিয়ে ইজরায়েলের বোমাবর্ষণের মুখে পড়েন তিনি। সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন ঘেব্রিয়েসুস। কিন্তু প্রাণ গিয়েছে অন্য দুজনের। এই মুহূর্তে গাজার পাশাপাশি একাধিক ফ্রন্টে লড়াই করতে হচ্ছে ইজরায়েলি সেনাকে। যার মধ্যে অন্যতম হাউথিরা। যাদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে আগুন ঝরাচ্ছে তেল আভিভ।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সংঘাত বেড়েছে ইজরায়েল ও হাউথিদের মধ্যে। কয়েকমাস ধরেই ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনটির ডেরা গুঁড়িয়ে দিতে ইয়েমেনে হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজধানী সানার বিমানবন্দরে আক্রমণ শানায় তারা। সেই মুহূর্তে সেখানেই উপস্থিত ছিলেন WHO প্রধান ঘেব্রিয়েসুস। মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণের মুখে পড়েন তিনি ও তাঁর দলের অন্যান্য সদস্যরা। কোনও মতে ভয়ংকর বিপদের হাত থেকে রক্ষা পান সকলে। ইয়েমেনে বন্দি রাষ্ট্রসংঘের কর্মীদের দ্রুত মুক্তি নিয়ে আলোচনা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন তাঁরা।
কীভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে এসেছেন তাঁরা, সেই হাড়হিম অভিজ্ঞতার কথা নিজেই জানিয়েছেন ঘেব্রিয়েসুস। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, 'আমরা সানা বিমানবন্দরে ছিলাম। ফ্লাইটে ওঠার অপেক্ষা করছিলাম। তখনই আকাশপথে হামলা শুরু হয়। মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ হতে থাকে। আমরা কোনওরকমে পালিয়ে গিয়ে বিমানবন্দরের ভিতরেই আশ্রয়নি। এই হামলায় রানওয়েটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের বিমানের দুই ক্রু সদস্য আহত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন বিমানবন্দরের দুজন। সমস্ত পরিস্থিতি ঠিক হওয়া পর্যন্ত আমরা সেখানেই অপেক্ষা করছিলাম। আমি এবং রাষ্ট্রসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আমার সহকর্মীরা এখন সুস্থ রয়েছি।'
এই ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এদিন এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, 'যেভাবে ইজরায়েল ও ইয়েমেনের মধ্যে সংঘাত বাড়ছে তা আঞ্চলিক স্তরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমি এনিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সানা বিমানবন্দরের হামলায় অল্পের জন্য প্রাণরক্ষা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস ও রাষ্ট্রসংঘের অন্যান্য সদস্যদের।'
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে হামলা তীব্র করেছে হাউথিরা। ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠনটির তরফে জানানো হয়েছে, গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের সমর্থনে এই হামলা চালানো হচ্ছে। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হামাসের পক্ষে রয়েছে তারা। যতদিন না গাজায় ইজরায়েলি ফৌজ হামলা বন্ধ করছে ততদিন এই আক্রমণ চলবে। গত মাসে তেল আভিভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল হাউথিরা। পালটা আঘাত হানছে ইজরায়েলও।