গোবিন্দ রায়: কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নেতা সায়ন লাহিড়ী। কেন ওই ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তার করা হল, তা জানতে চাইলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ওই ছাত্রনেতা সেভাবে 'প্রভাবশালী' না হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে নবান্ন অভিযানে এত লোক জোগাড় হল, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। এই মামলার শুনানি শেষ। রায়দান আপাতত স্থগিত।
শুনানিতে আদালতের তরফে রাজ্যকে পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়। প্রথমত, আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য, দেশ এবং দেশের সীমানা ছাড়িয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। রাতদখলের কর্মসূচি-সহ কটি ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে এবং পুলিশ অনুমতি দিয়েছে? দ্বিতীয়ত, সায়ন লাহিড়ী কতটা প্রভাবশালী? তার কি অপরাধমূলক কোনও পূর্ব ইতিহাস আছে? তিনি আদৌ নেতা? নাকি গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল? ওঠে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নামও। তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। সায়ন লাহিড়ীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগও উঠেছে। সেক্ষেত্রে আদালতের প্রশ্ন, উসকানি দেওয়ার অভিযোগে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? পঞ্চমত, প্রকৃত দোষী কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে?
[আরও পড়ুন: RG Kar এবং ন্যাশনাল মেডিক্যালে একই সময়ে উপস্থিতি! এবার স্ক্যানারে সন্দীপের আপ্ত সহায়ক]
ছাত্রনেতা সায়ন লাহিড়ীর আইনজীবীও ক্ষোভ উগরে দেন। আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "পুলিশ একটা এমন নিদর্শন দেখাক যেখান থেকে প্রমাণ হবে সায়ন লাহিড়ী পুলিশকে আহত করেছেন বা আহত করার উদ্দেশ্য নিয়ে মিছিলে যোগদান করেছিলেন। পুলিশ কি এমন কোনও প্রমাণ দেখাতে পারবে যেটা থেকে স্পষ্ট হয় আমার মক্কেল কাউকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন? এখনও পর্যন্ত তাঁর নামে তিনটি এফআইআর আছে। আর কোনো এফআইআর আছে কিনা জানানো হোক। এবং অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হোক। তৃণমূলের ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই অভিযোগ আনতে পারে? পুলিশ কি কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পত্তি রক্ষায় বেশি উৎসাহী?"
তবে রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দেন, "একজন ছাত্রনেতা হিসাবে সায়ন মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি মিছিলের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনার দায় এড়াতে পারেন? নবান্ন অভিযানের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেছেন পুলিশের অনুমতি নেবেন না। দুটি মিছিলের কথা বলে কমপক্ষে ৫ টি মিছিল বেরিয়েছিল। বার বার তাঁর কাছে নবান্ন অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি দেননি। এভাবে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন।" উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি সিনহা।