সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের (Julian Assange) প্রত্যর্পণ আটকে দিল লন্ডনের আদালত। উইকিলিকসের (Wikileaks) প্রতিষ্ঠাতার মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই আদালতের এই সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের জেরে ফের ধাক্কা খেল আমেরিকা। তবে মার্কিন প্রশাসন ফের আদালতের দ্বারস্থ হবে বলে খবর।
অ্যাসাঞ্জকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানিয়েছিল ট্রাম্পের প্রশাসন। এই আরজি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বলে দাবি করে পালটা আদালতে গিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জের আইনজাবী। যদিও সোমবার লন্ডনের আদালতের বিচারপতি ভানেসা বারিতসার তাঁর সওয়াল জবাবে পাত্তা দেননি। তবে শেষ পর্যন্ত উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতের প্রত্যর্পণ রুখে দেন বিচারপতি। জানান, অ্যাসাঞ্জ যে কোনও মুহূর্তে আত্মঘাতী হতে পারেন। তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিল লন্ডনের আদালত।
[আরও পড়ুন : ড্রাগনের চাপ! বিস্ফোরক-সহ ধৃত ১০ জন চিনা গুপ্তচরকে মুক্তি দিল আফগানিস্তান]
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে উইকিলিকস নামের ওয়েবসাইটটি চালু করেন অ্যাসাঞ্জ। সেই ওয়েবসাইটে তিনি একের পর এক গোপন মার্কিন নথিপত্র প্রকাশ করতে থাকেন। আর এই কারণে তাঁর উপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয় মার্কিন প্রশাসন। গ্রেপ্তারি এড়াতে সাত বছর ধরে ব্রিটেনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। গত বছরের ১১ এপ্রিল লন্ডন পুলিশ উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে লন্ডনে তাঁর বিচার চলছে।
এদিকে আমেরিকা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচর আইন লঙ্ঘন ও সরকারি কম্পিউটারে হ্যাকিং-সহ ১৮টি অভিযোগ এনেছে। দোষ প্রমাণিত হলে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে কয়েক দশক জেলে কাটাতে হতে পারে। তাই অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তরের জন্য চাপ দিচ্ছে আমেরিকা। লন্ডনের আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে তাঁরা।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে আগস্ট মাসে স্টকহোমে বক্তৃতা দিতে গিয়ে দুই মহিলার সঙ্গে আলাপ হয় অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জের। তাঁদের মধ্যে একজন সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য। অ্যাসাঞ্জকে তাঁর বাড়িতে থাকার আমন্ত্রণও করেন ওই মহিলা। পরে ওই দুই মহিলার একজন অভিযোগ করেন, তাঁকে ধর্ষণ করেছেন অ্যাসাঞ্জ। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন অন্য এক মহিলাও। তবে প্রথম থেকেই তাঁদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। তাঁর বক্তব্য, সম্মতি নিয়েই তাঁদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক হয়েছিল। কিন্তু ওই দুই মহিলার সঙ্গে কথা বলে সুইডেন পুলিশ মনে করে যে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের অভিযোগ আনা যেতে পারে। সুইডেনেও অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার মামলা চলছে।