দেব গোস্বামী, বোলপুর: দুবছর পর গরাদের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে শরতের আলো ঝলমলে দিন চাক্ষুষ করলেন। এক পুজোর আগে বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি নিয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আরেক পুজোর আগেই ফের নিজের গড়ে প্রত্যাবর্তন বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত ওরফে কেষ্ট মণ্ডলের। মঙ্গলবার সকালেই তিনি বোলপুর ফিরেছেন। মহাধুমধামে কেষ্ট-বরণ করেছেন বোলপুরবাসী। ঘটনাচক্রে এমন সময়েই তিনি বোলপুরে ফিরলেন, যখন এখানে রয়েছেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তিনি। 'দিদি'র সদা অনুগামী, 'প্রিয় ভাই' কেষ্ট মণ্ডল কি দেখা করতে যাবেন? এর জবাবে কিন্তু ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি।
নিচুপট্টির বাড়িতে অনুব্রত। নিজস্ব চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের(Anubrata Mondal) সুসম্পর্কের কথা অবিদিত নয় কারও। তিনি রাজনৈতিক বৃত্তেরই হোক বা তার বাইরের। সিপিএম জমানা থেকে লড়াই করে বীরভূমের লালমাটিতে ঘাসফুলকে দাপটের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করা অনুব্রত গোড়া থেকে মমতার অত্যন্ত স্নেহভাজন, ঘনিষ্ঠ। ২০২২ সালে যখন গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় সিবিআই, তখন থেকেই মমতার একটাই প্রতিক্রিয়া, ষড়যন্ত্র হয়েছে। একদিন ছাড়া পেয়ে যাবে। সেই কারণে সম্ভবত বীরভূমের জেলা সভাপতি পদটি তিনি ফাঁকা রেখেছিলেন। সাংগঠনিক কাজ চালাতে গড়ে দিয়েছিলেন কোর কমিটি। ২ বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। জেল থেকে বেরিয়ে বলেছেন 'দিদি'র কথাই।
মঙ্গলবার সকালে বোলপুরে পৌঁছেছেন অনুব্রত। আর এই সময়ে মুখ্যমন্ত্রীও রয়েছেন বোলপুরে। ফলে উভয়ের সাক্ষাতের সম্ভাবনা প্রবল। তবে 'দিদি'র সঙ্গে দেখা করা নিয়ে ততটা নিশ্চিন্ত সুর শোনা গেল না কেষ্টর গলায়। এদিন জনতা পরিবৃত হয়ে নিচুপট্টির বাড়িতে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, ''মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এখানে এসেছেন। তাঁকে আমি ভালোবাসি। দিদির আশীর্বাদে আমি ভালো আছি। কিন্তু আমার পায়ের অবস্থা ভালো নেই। যদি সম্ভব হয়, দিদির সঙ্গে দেখা করতে যাব, শারদীয়া শুভেচ্ছা জানাব।'' অনিশ্চয়তা জিইয়ে রাখলেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীও। বললেন, ''দেখা করবেন কিনা, সেটা উনিই ঠিক করবেন। এ বিষয়ে এখনও কথা হয়নি। তবে এখানে যখন মুখ্যমন্ত্রী আছেন, দেখা হতেই পারে।''