বাবুল হক, মালদহ: দিনের পর দিন স্ত্রীর উপর অত্যাচার করার অভিযোগ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। অন্য মহিলার সঙ্গে স্বামীর সম্পর্ক আছে! বিয়ের পরেই জানতে পারেন স্ত্রী। এদিকে স্বামীর ব্যভিচারের মাত্রাও দিন দিন বাড়ছিল। তক্কে তক্কে ছিলেন স্ত্রী। এর মধ্যেই কানে এসেছিল স্বামী মধুচক্রের আসরে মশগুল। আর কালবিলম্ব করেননি ওই মহিলা। সটান আগে গিয়েছিলেন থানায়। তারপর থানা থেকে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান ওই মধুচক্রের আসরে। স্ত্রীকে সেখানে দেখে হতবাক হয়েছিলেন গুণধর স্বামীও। পরে পুলিশকর্মীরা ওই অভিযুক্তকে পাকড়াও করে নিয়ে যায়। শুক্রবার বিকেলে এই ঘটনাই ঘটেছে মালদহের ইংলিশবাজার থানার কোতোয়ালির নিমাইসরা এলাকায়।
অভিযুক্ত যুবক বিক্রম রজককে আটক করেছে ইংলিশবাজার থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, বিক্রম রাজ্য পুলিশের রায়গঞ্জ থানায় কনস্টেবল পদে নিযুক্ত। ইংলিশবাজার থানার কাজিগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তাঁর বাড়ি। প্রায় আট মাস আগে ওই পুলিশকর্মীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল করমনি এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণীর। বিয়ের পরই পুলিশকর্মী স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পারেন স্ত্রী। স্বামীকে সেই সম্পর্ক থেকে সরে আসতে বলেন স্ত্রী। কিন্তু বিক্রম সেই কথা কানেই তোলেনি বলে অভিযোগ। আর এই নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকত। স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় জুটত মার! এমনকী তাঁকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশের কাছে গেলে ফল ভালো হবে না, এমন শাসানিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ।
দিনের পর দিন অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছিলেন না স্ত্রী। স্বামীর গতিবিধি জানার জন্য লোকও লাগিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার বিকেলের পর ওই এলাকারই একটি বাড়িতে মধুচক্রের আসর বসে বলে অভিযোগ। সেখানে তাঁর কনস্টেবল স্বামীও উপস্থিত বলে খবর আসে ওই তরুণীর কাছে। আর দেরি করেননি তিনি। সটান চলে যান ইংলিশবাজার থানায়। গোটা বিষয় জানানো হয়। ইংলিশবাজার থানার পুলিশ ওই তরুণীকে নিয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছে যায়। ভিতরে হানা দিতেই এক মহিলার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায় ওই গুণধর কনস্টেবলকে। সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্ত বিক্রম রজককে পাকড়াও করে থানায় নিজে যাওয়া হয়। তবে স্বামীকে এই অবস্থায় দেখে আর মনকে শক্ত করে রাখতে পারেননি স্ত্রী। হাউহাউ করে পরে কেঁদে ফেলেন তিনি।
নিমাইসরা গ্রামের স্থানীয় তৃণমূল সদস্য ধরমবীর পাশোয়ান বলেন, "ওই পুলিশকর্মীর যে মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল, সেই বাড়িতে প্রতিনিয়ত মধুচক্রের আসর বসে। আমরা চাই এই সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ হোক আমাদের এলাকায়।" পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।