সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’মাসের বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War)। প্রথম থেকেই রাশিয়ার হামলার ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কা সত্যি করেই বার্তা দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ অন্য কোনও দেশ হস্তক্ষেপ করলে ‘বিদ্যুতগতিতে’ পালটা আক্রমণ করবে রাশিয়া।
পুতিন (Vladimir Putin) বলেছেন, “যদি কোনও দেশ ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতিতে নাক গলাতে আসে, সেটা ভালভাবে নেওয়া হবে না। কৌশলগত ক্ষেত্রে রাশিয়ার সমস্যা তৈরি করলে, আমরাও বিদ্যুদ্বেগে জবাব দেব।” হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজন পড়লে অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পিছপা হবে না রাশিয়া।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার হাতে এই মুহুর্তে রয়েছে বিদ্ধংসী অস্ত্রভান্ডার। গত মাসেই স্যাটান ২ ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। এছাড়াও হাইপারসোনিক মিসাইল রয়েছে রাশিয়ার হাতে। অস্ত্র প্রসঙ্গে পুতিন বলেছেন, “আমাদের হাতে যা অস্ত্র রয়েছে তা অন্য কোনও দেশের হাতে নেই। সকলে জেনে রাখুক, অস্ত্র ভান্ডার নিয়ে বড়াই করব না আমরা। প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই ব্যবহার করব।”
[আরও পড়ুন: সত্যি হল আশঙ্কা, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাসের জোগান বন্ধ করল রাশিয়া]
সরাসরি ইউক্রেনে সৈন্য পাঠায়নি কোনও দেশ। তবে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে বেশ কয়েকটি দেশ। তার মধ্যে অন্যতম আমেরিকা (USA)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, একটি রুশ ট্যাঙ্কের অনুপাতে দশটি অ্যান্টি আর্মার সিস্টেম পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বিপুল পরিমাণে মিসাইল, গ্রেনেড লঞ্চার, হেলিকপ্টার, ড্রোন, মেশিন গান, রেডার সিস্টেম ইত্যাদি পাঠানো হয়েছে ইউক্রেনে। রুশ হামলার মোকাবিলা করতে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়েছে ব্রিটেন, চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানি-সহ আরও বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ।পুতিনের এই বার্তা আমেরিকা এবং সেই দেশগুলিকে উদ্দেশ্য করেই, এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
গতকালই ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশ পোল্যান্ড এবং বুলগেরিয়াতে গ্যাস সরবরাহ করা বন্ধ করে দিয়েছে রুশ সংস্থা গ্যাজপ্রম। ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে রাশিয়া। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও প্রতিদিন জ্বালানির মূল্য বাবদ রাশিয়াকে ৪০ কোটি ডলার দেয় ইউরোপ। কিন্তু আর্থিক লাভের সম্ভাবনাও অগ্রাহ্য করেও ইউরোপীয় দেশে আক্রমণ করতে প্রস্তুত রাশিয়া।
ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরেই রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায় বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ। ফলে ইউরোপে আটকে থাকা সম্পদ কাজে লাগাতে পারছেনা রাশিয়া। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতারেসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন। সেখানে তিনি বলেছেন, মাবনবাধিকার রক্ষার জন্য ইউক্রেনে আটকে পড়া সাধারন মানুষকে উদ্ধার করতে মানব করিডর করেছে রাশিয়া। কিন্তু করিডরের সুবিধা নিয়ে মানব প্রাচীর তৈরি করে রুশ আক্রমণ আটকাতে চাইছে ইউক্রেন।