সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামাস জঙ্গিদের খতম করতে গাজা ভূখণ্ডে তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। গত ছয় মাস ধরে চলছে রক্তক্ষয়ী এই লড়াই। সংঘাতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষের মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দার মুখে পড়েছে তেল আভিভ। এর আগে ইজরায়েলকে যুদ্ধপরাধীর তকমা দিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান। এবার ইহুদি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ‘আল্লার কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দিলেন তিনি।
টাইমস অফ ইজরায়েল সূত্রে খবর, এক প্রচার সভায় গাজায় ইজরায়েলি বাহিনীর হামলা নিয়ে কথা বলছিলেন এরদোগান। যেভাবে দিন দিন প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে তা নিয়ে ইজরায়েলের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এর পরই নেতানিয়াহুকে নিশানা করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। হুমকি দিয়ে বলেন, “ওঁকে আল্লার কাছে পাঠিয়ে দেব।” এরদোগান এহেন মন্তব্যে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী ইজরায়েল কাৎজ। তলব করেন তুরস্কের সহকারী রাষ্ট্রদূতকে।
এনিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে কাৎজ লেখেন, ‘আমি আমার আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছি তুরস্কের সহকারী রাষ্ট্রদূতকে সমন পাঠানোর জন্য। এরদোগান যেভাবে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন তা একেবারেই কাম্য নয়। উনি হুমকি দিয়ে বলেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আল্লার কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এনিয়ে আমরা তাঁকে পরিষ্কার একটি বার্তা দিতে চাই।’ তুরস্ককে তোপ দেগে তিনি বলেন, “যারা শিশুদের হত্যা করে, মহিলাদের ধর্ষণ করে আপনারা সেই হামাস জঙ্গিদের সমর্থন করেন। ভগবান কখনও বর্বর, নৃশংস হামাসের বন্ধুদের কথা শোনেন না। চুপ করে থাকুন। নিজেদেরকে নিয়ে লজ্জা বোধ করুন।” প্রসঙ্গত, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই ইজরায়েল থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নেয় তুরস্ক।
[আরও পড়ুন: ‘মে ডে’ বার্তাই বাঁচিয়েছে বহু প্রাণ, বাল্টিমোরের সেতু দুর্ঘটনায় ভারতীয় নাবিকদের ধন্যবাদ বাইডেনের]
বলে রাখা ভালো, হামাসের সঙ্গে ইজরায়েলের সংঘর্ষে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলে এরদোগানকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “প্রতিটি দেশের অধিকার রয়েছে আত্মরক্ষার। কিন্তু এখানে ন্যায় কোথায়? ইজরায়েল যুদ্ধাপরাধীর মতো আচরণ করছে। পশ্চিমী দেশগুলো ইউক্রেনের যুদ্ধে প্রয়াতদের উদ্দেশে চোখের জল ফেললেও গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের বেলায় তারা চোখ বুজে রয়েছে। এই ধরনের দ্বিচারিতার বিরোধিতা করছি। আমরা সারা বিশ্বকে বলতে চাই, ইজরায়েল এক যুদ্ধাপরাধী। আমরা এর প্রস্তুতি নিচ্ছি। ওদের যুদ্ধাপরাধী বলে ঘোষণা করবই।”
বলে রাখা ভালো, এই যুদ্ধে প্যালেস্তিনীয়দের মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। ইজরায়েলি সেনা অভিযানে গাজায় সাধারণ মানুষের মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রবল নিন্দার ঝড় বয়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার রাষ্ট্রসংঘে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পেশ হয়েছে। কিন্তু আমেরিকার ভেটো প্রয়োগে তা আটকে যায়। তবে গত সোমবার ‘বন্ধু’ ইজরায়েলকে জোর ধাক্কা দেয় ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসন ভেটো প্রয়োগ না করায় নিরাপত্তা পরিষদে পাশ হয়ে যায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব।