সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার ভয়ে মাস্কে মুখ ঢেকে, আর হাত স্যানিটাইজার মেখে কেটে গিয়েছে বছরটা। একেবারে শেষপর্যায়ে এসে সবেমাত্র স্বস্তির নিশ্বাস নিচ্ছিল মানুষ। মনে করছিল, ভ্যাকসিন মিলেছে, এবারে রেহাই পাব। ঠিক সেই সময় ব্রিটেনে করোনার নয়া ‘রূপে’র খোঁজ মিলল। যার জেরে বছর শেষের সবচেয়ে চর্চিত প্রশ্ন, করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনগুলি (Vaccine) কি আদৌ এই ভাইরাসের উপর কাজ করবে?
ইতিমধ্যে লন্ডনে এক নতুন ধরনের কোভিড-১৯ (COVID-19) ভাইরাসের দেখা মিলেছে। যা এতদিনের চেনা ভাইরাসের থেকে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। গত দু’সপ্তাহ ধরেই ইংল্যান্ডে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। আর তার ভয়েই এবার তটস্থ গোটা বিশ্ব। ব্রিটেনের কিছু অংশে ক্রিসমাসের কেনাকাটা, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে বরিস জনসনের সরকার। ব্রিটেনের উড়ানেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। এমন আবহে নতুন আতঙ্কে ভুগছে সাধারণ মানুষ।
[আরও পড়ুন : করোনাজয়ের পর চোখে সংক্রমণ? সাবধান, প্রাণও কাড়তে পারে বিশেষ ধরনের ছত্রাক]
ব্রিটেন সরকারের মতে, করোনা ভাইরাস (Corona Virus) ক্রমশ মিউটেট করেছে। এই বিশেষ মিউটেশনের ক্ষেত্রে ১৭টি পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাসের স্পাইকে। অর্থাৎ যে অংশ দিয়ে মানুষের শরীর সংক্রমণ ঘটায় জীবাণুটি। দ্বিতীয়ত আরও সংক্রামক করে তুলেছে এই মিউনটেশন। ফলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নয়া ভাইরাসের উপরও আপাতত ভ্যাকসিন পুরোপুরি কার্যকর হবে। ভ্যাকসিনগুলি ভাইরাসের প্রোটিন স্পাইকটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পাশাপাশি, ভাইরাসের বিভিন্ন অংশকে আক্রমণ করে ভ্যাকসিন। তাই স্পাইক মিউটেট করলেও ভ্যাকসিন কার্যকরী হওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি চিফ এমার কুক ফাইজারের টিকা সম্পর্কে বলেন, “এখনও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যাতে বলা যায় যে, ফাইজারের টিকা নয়া ধরণের করোনা ভাইরাসের উপর কাজ করবে না।” আবার Council for Scientific and Industrial Research-এর ডিরেক্টর জেনারেলও একই আশার বাণী শুনিয়েছেন। বলছেন,”মিউটেশনের পরও ভ্যাকসিন একইভাবে কার্যকর হবে। তাই ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।” কিন্তু একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, খুব বেশি মিউটেশন হলে ভাইরাসের চরিত্র বদলে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে প্রতিষধকের কার্যকারিতা।