সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে (Afghanistan) মহিলাদের অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে নিন্দায় সরব আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু তাতে যে তালিব (Taliban) শাসকদের কিছু যায় আসে না, তা স্পষ্ট করে দিল তারা। তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে পরিষ্কার জানিয়ে দিল, নারীর বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা অগ্রাধিকার নয় তাদের। যা থেকে পরিষ্কার, মেয়েদের স্বাধীনতা দিতে এক কপর্দক রাজি নয় জেহাদিরা।
আফগান সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তালিবান মুখপাত্রকে বলতে শোনা যায়, ”ইসলামিক শরিয়তের উপরে নির্ভর করেই ইসলামিক শাসন জারি থাকবে। ক্ষমতাসীন সরকারের কাছে নারীর বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করাটা কখনওই অগ্রাধিকার নয়।”
[আরও পড়ুন: নেপালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ৬৮ জন যাত্রী নিয়ে রানওয়েতে ভেঙে পড়ল বিমান]
২০২১ সালের আগস্টে নতুন করে আফগানিস্তান দখল করার পর তালিবান আশ্বাস দিয়েছিল, এটা তালিবান ২.০। যারা নারী স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতার মতো বিষয়গুলিতে বিশ্বাস করে। কিন্তু সেই কথা যে স্রেফ কথার কথা ছিল, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল কয়েক দিনের মধ্যেই। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়কালেও মেয়েদের উচ্চশিক্ষার অধিকার ছিল না। এছাড়াও পরকীয়া, চুরির মতো ঘটনায় প্রকাশ্যে বেত মারা এমনকী মেরে ফেলার ঘটনাও ছিল স্বাভাবিক। সেই বিষয়গুলিই নতুন করে কার্যকর হচ্ছে। যা বুঝিয়ে দিয়েছে তালিবান আছে তালিবানেই।
গত কয়েক মাসে ‘কাবুলিওয়ালার দেশে’ একের পর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে মহিলাদের উপরে। মিডল স্কুল ও হাই স্কুলে পড়াশোনায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মেয়েদের কাজ করার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও রাস্তায় একা চলাফেরা, বুরখা পরা নিয়েও কঠোর নিয়ম জারি করা হয়েছে। সঙ্গে একজন পুরুষ না থাকলে পার্ক ও জিমে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না মেয়েদের।
[আরও পড়ুন: কেকে লেখা ‘বিগ বস’, গ্যাংস্টার ছোটা রাজনের জন্মদিন পালন করে বিতর্কে শিব সেনা নেতা]
গত ডিসেম্বরে মহিলাদের উচ্চশিক্ষার উপরে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা অবধি মহিলাদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া যাবে না বলেই জানিয়েছে তালিবান। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, শাসন ক্ষমতায় ফেরার পর প্রগতিশীল ভাবনার কথা বললেও তালিবান আসলে মধ্যযুগীয় আফগান শাসনকেই ফের কায়েম করতে চাইছে নিজেদের দেশে। বাকি বিশ্বের নিন্দায় পরোয়া করছে না। সেই বক্তব্যে যে ভুল নেই তা এবার সরাসরি তালিবান মুখপাত্রের কথায় পরিষ্কার হয়ে গেল।