সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার (Coronavirus) দাপটে থরহরিকম্প গোটা বিশ্ব। তাকে সামলাতে গিয়ে ফাঁক গলে ঢুকে পড়ছে আরও অনেক ভাইরাস। বিশেষত করোনার কারণে বিশ্বে শিশুদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা। থমকে গিয়েছে তাদের বিভিন্ন প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ। সম্প্রতি এ নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রাষ্ট্রসংঘ।
ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হেপাটাইটিস বি-সহ একাধিক প্রতিষেধক জন্মের পর ধাপে ধাপে দেওয়া হয় শিশুদের। একেক বয়সের জন্য একেকটা প্রতিষেধক নির্দিষ্ট করে দেন চিকিৎসক। কিন্তু মাস তিনেক ধরে করোনা আবহে সময়মতো শিশুদের সেসব ভ্যাকসিন নেওয়ার কাজ কার্যত বন্ধ।
[আরও পড়ুন: করোনা নির্ণয়ের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তার কিট বানিয়ে ফেলল ভারত, নাম ‘করোশিওর’]
WHO প্রধান টেডরোজ ঘেব্রিয়েসুসের মতে, বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য পরিষেবায় বেশ প্রভাব ফেলবে সময়মত শিশুকে ভ্যাকসিন না দেওয়া। জন্মের পর বেড়ে ওঠার সময়েই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধক দেওয়ার কারণ, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা। যদি সেটাই থেমে যায়, তাহলে সময়মতো শিশু শরীরে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে না। ফলে এই সময়ে শিশুদের অসুস্থতা এবং মৃত্যুর হারও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ।
WHO’র পরিসংখ্যান বলছে, অন্তত ৮০টি দেশের শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার তিন চতুর্থাংশ প্রকল্পের ভার রাষ্ট্রসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপর। সেসব কাজ আপাতত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রথমত, লকডাউনের জেরে এক জায়গা থেকে অন্যত্র গিয়ে শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ায় বাধা পড়ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ঠিকমতো পিপিই (Personal Protestion Kit) নেই, তাই তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে শিশুদের সংস্পর্শে আসতে পারছেন না। অনেক স্বাস্থ্যশিবিরই বন্ধ পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে এই করোনা আবহে। যার মধ্যে রয়েছে হামের মতো রোগের প্রতিষেধক খাওয়ানোর অন্তত ৩০ টি শিবির।
[আরও পড়ুন: আশার আলো! ‘করোনা ভ্যাকসিনে’র প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফল, দাবি মার্কিন সংস্থার]
ইউনিসেফের প্রধান হেনরিয়েট ফোরের কথায়, ”যত দ্রুত সম্ভব, এগুলো চালু করতে হবে। নইলে শিশুদের স্বাস্থ্য পরিষেবা বড়সড় সমস্যার মধ্যে পড়বে। এক রোগের মোকাবিলা করতে গিয়ে শিশুদের আমরা বিপন্নতার দিকে ঠেলে দিতে পারি না।” বিশেষত দরিদ্র দেশগুলিতে এ ধরনের ভ্যাকসিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ, সেসব দেশের মানুষজন বাচ্চাদের জরুরি প্রতিষেধক খাওয়ানোর জন্য বিনামূল্যে হওয়ার এসব স্বাস্থ্য শিবিরের উপরেই নির্ভর করেন। কিন্তু করোনা আতঙ্কে কেড়ে নিয়েছে সব কিছুই। দ্রুত পরিস্থিতি বদল না হলে স্রেফ অপুষ্টি ও দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণেই অনেক শিশু মৃত্যুর মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রসংঘের।
The post করোনা আবহে থমকে শিশুদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ, উদ্বেগে রাষ্ট্রসংঘ appeared first on Sangbad Pratidin.